ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি তৈরির জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছে। এর সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং ইরানের জব্দ থাকা শত শত কোটি ডলারের তহবিল ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে। তেহরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আরও জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেছেন। এমনকি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরেও এই সপ্তাহে আলোচনা অব্যাহত ছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে, তবে সেগুলো এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং পরিবর্তনশীল। কিন্তু একটি বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, আর তা হলো-ইরানকে অবশ্যই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে। যদিও ইরান বরাবরই নিজেদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কথা বলে আসছে।
সিএনএন-কে দুটি সূত্র জানিয়েছে, অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবে ইরানের জন্য বেশ কিছু আকর্ষণীয় সুযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।এই আলোচনার কিছু বিবরণ গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে কয়েক ঘণ্টার গোপন বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়। এই বৈঠকের পরদিনই যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সামরিক হামলা চালায় বলে দুটি সূত্র সিএনএন-কে জানিয়েছে।
আলোচনার শর্তাবলীর মধ্যে একটি নতুন বিষয় হলো, ইরানের অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে, যা বেসামরিক জ্বালানি শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাবটি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো সিএনএন-কে এই তথ্য জানিয়েছে। একজন কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন যে এই অর্থ সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না, বরং তারা চায় তাদের আরব মিত্ররা এই অর্থ প্রদান করুক। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে ইরানের পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রে বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএন-কে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি তৈরির জন্য কাউকে না কাউকে অর্থ দিতে হবে, কিন্তু আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।"
তথ্যসূত্র সিএনএন।
ডিবিসি/এমইউএ