ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা নদীর চর সোনারামপুর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে পরিচালিত এক অভিযানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা, তাকে অপহরণের চেষ্টা এবং একটি জব্দকৃত ড্রেজার ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই ব্যক্তিকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
মঙ্গলবার (২রা সেপ্টেম্বর) পরিচালিত এই অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আব্দুর রশীদের ছেলে আহমদ আলী এবং নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শাহজাহান মিয়ার ছেলে আমজাদ হোসেন।
অভিযানটির নেতৃত্ব দেন আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফে মোহাম্মদ ছড়া। তিনি জানান, ভৈরব প্রান্তের ইজারাদার একটি চক্র সীমানা লঙ্ঘন করে আশুগঞ্জ প্রান্ত থেকে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা এই বেআইনি কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে চারটি ড্রেজার ও পাঁচটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ড্রেজারগুলো হলো মায়ের দোয়া লোড ড্রেজার-১, মায়ের দোয়া লোড ড্রেজার-২, মৌসুমী ড্রেজার ও সুমন এন্টারপ্রাইজ ড্রেজার। বাল্কহেডগুলোর মধ্যে রয়েছে মেসার্স ফ্রেন্ডশিপ নেভিগেশন, ফজলে রাব্বী, আল্লাহ ভরসা, ফি আমানিল্লাহ নৌ পরিবহন ও মেসার্স ঢালি এন্টারপ্রাইজ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগ করেন, অভিযান চলাকালে ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই তারেকের নেতৃত্বে একদল লোক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা 'এমবি মরিয়ম' নামক একটি ড্রেজার জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং কর্মকর্তাদের অপহরণ করে ভৈরবের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে কর্মকর্তারা দ্রুত স্পিডবোটের মাধ্যমে আশুগঞ্জে ফিরে আসতে সক্ষম হন।
এই ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং হামলার অভিযোগে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানিয়েছেন, মেঘনা নদীকে রক্ষা করতে এবং অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের এই কঠোর অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ডিবিসি/এএমটি