আজকের এই দিনে বসনিয়ার যুদ্ধ বা বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার যুদ্ধ শুরু হয়। এটি ছিল একটি আন্তর্জাতিক সামরিক যুদ্ধ। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
এই যুদ্ধে বিভিন্ন পক্ষ সংশ্লিষ্ট ছিলো, যার মধ্যে রয়েছে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা। সেখানে বসবাসকৃত স্বতন্ত্র পরিচয়দাবীকৃত বসনীয় সার্ব ও বসনীয় ক্রোয়েট গোষ্ঠী, রেপুব্লিকা স্পোর্সকা ও হার্জে-বসনিয়া, যারা ছিলেন যথাক্রমে সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার সহায়তাপুষ্ট।
এই যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায় ও সোশালিস্ট ফেডারেল রিপাবলিক অফ যুগোস্লাভিয়া ও সোশালিস্ট রিপালিক অফ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা নামের নতুন দু’টো রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এর মধ্যে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ছিলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, যার মোট জনগোষ্ঠীর ৪৪% মুসলিম বসনীয়, ৩১% অথোর্ডক্স সার্বীয়, এবং ১৭% ক্রোয়েশীয় ক্যাথলিক।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২-এ তাদের স্বাধীনতার ঘোষণা পাস করে। কিন্তু এই ঘোষণা বসনীয়-সার্ব রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা প্রত্যাখান করে এবং নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।
এর ফলে সার্বিয়ান সরকারের প্রধান স্লোবদান মিলসোভিচের সহায়তায় বসনীয়-সার্ব বাহিনী এবং যুগোস্লাভ পিপল’স আর্মি রাষ্ট্রটির সার্বীয় অংশ নিজেদের দখলে নিতে রিপাবলিক অফ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা আক্রমণ করে। এর পর খুব তাড়াতাড়িই সমগ্র বসনিয়া জুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়, এবং বসনিয়ার বিভিন্ন অংশের (বিশেষ করে পূর্ব বসনিয়ার) জাতিগত জনগোষ্ঠী এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
বসনিয়ার যুদ্ধ ছিল বিগত নব্বইয়ের দশকে সংঘটিত একটি বড় ট্র্যাজেডি। এ যুদ্ধে নিহতদের বেশিরভাগই ছিল মুসলমান। মুসলমানদের নির্মূল করার উদ্দেশ্যে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছিল সার্বরা। এই যুদ্ধে গণহত্যা ও ধর্ষণ এমনকি শিশু কন্যাদের ধর্ষণ ও শিশুদের হত্যা করাকে যুদ্ধ জয়ের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছিল বর্বর সার্বরা। কথিত সভ্য ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনও এতবড় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান ঘটেনি।
ডিবিসি/ এফটিএম