ইন্দোনেশিয়ায় চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থানের পর প্রতিবাদকারীদের সমর্থনে এক অভিনব উপায় বেছে নিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাধারণ মানুষ।
মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের নাগরিকরা ফুড ডেলিভারি অ্যাপ 'গ্র্যাব' ও 'গোজেক' ব্যবহার করে ইন্দোনেশিয়ার ডেলিভারি রাইডারদের জন্য খাবার অর্ডার করছেন এবং বার্তা পাঠিয়ে তা উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে বলছেন।
ইন্দোনেশিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক বৈষম্য এবং রাজনীতিবিদদের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভে ডেলিভারি রাইডাররা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গত সপ্তাহে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া 'গোজেক' চালক আফ্ফান কুর্নিয়াওয়ানের মৃত্যুর পর এই প্রতিবাদ আরও সহিংস রূপ নেয়, যাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাসিন্দারা #SEAblings (South East Asia Siblings) হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভকারীদের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশ করছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা কীভাবে ইন্দোনেশিয়ায় খাবার অর্ডার করে রাইডারদের সাহায্য করা যায়, তার নির্দেশিকা পোস্ট করছেন। বার্তা পাঠিয়ে রাইডারদের জানানো হচ্ছে যে, এই খাবার তাদের পৌঁছে দিতে হবে না, বরং তারা নিজেরা খেতে পারেন বা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিতে পারেন।
ফিলিপাইনের বাসিন্দা তারা বিবিসিকে বলেন, 'আমি ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছি এবং সবসময় মোটরবাইক ট্যাক্সি ব্যবহার করেছি। চালকরা খুবই আন্তরিক। তাদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব বলে মনে করি। এই মুহূর্তে খাবার পাঠানোই আমার একমাত্র উপায়।'
মালয়েশিয়ার এক ছাত্র আয়মান হারিজ বলেন, 'ইন্দোনেশিয়ার জনগণের সাহস ও একতা দেখে আমি অনুপ্রাণিত। অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের রুখে দাঁড়ানো এটাই প্রমাণ করে যে, জনগণই আসল শক্তি।'
পশ্চিম জাকার্তার একজন ডেলিভারি রাইডার তৌফিক জানান, তিনি সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে এমন একটি অর্ডার পেয়েছেন। তিনি বলেন, 'বিক্ষোভের কারণে আমাদের অর্ডার অনেক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে পাঠানো এই খাবার আমাদের জন্য অনেক বড় সাহায্য।'
ইন্দোনেশিয়ার অনেক রাইডার সামাজিক মাধ্যমে দাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, সিঙ্গাপুর থেকে খাবার পেয়ে একজন রাইডার কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং ধন্যবাদ জানান।
তথ্যসূত্র বিবিসি।
ডিবিসি/এমইউএ