যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তীব্র আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। স্কটল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় চালুর চেষ্টা করে, তবে তা "চোখের পলকে" নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তেহরান ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে চলমান পারমাণবিক সংকট এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
গতকাল সোমবার স্কটল্যান্ডে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ইরান খুবই বাজে সংকেত দিচ্ছে। তাদের এটা করা উচিত নয়। আমরা তাদের পারমাণবিক সম্ভাবনাকে শেষ করে দিয়েছি। তারা যদি আবার তা শুরু করে, আপনি আঙুল তোলার আগেই আমরা সেটা নিশ্চিহ্ন করে দেব।’ ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ধরনের ছাড় দিতে নারাজ।
ট্রাম্পের এই হুমকির জবাবে ইরানও তাদের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, তেহরান কখনোই ভীতি প্রদর্শন বা হুমকির ভাষায় সাড়া দেবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং এর মূল উদ্দেশ্য চিকিৎসা ও বেসামরিক খাতে শক্তির যোগান দেওয়া। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় আরাগচি এই বিষয়টি তুলে ধরেন, যা ইরানি কর্মকর্তারা ‘গুরুত্বপূর্ণ ও খোলামেলা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
গত জুনে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলার পর এটিই ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তেহরানের প্রথম উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠক। তবে এই আলোচনা থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি ত্যাগ করবে না, তবে আলোচনার পথ খোলা রাখবে। তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বর্তমানে চরমে। গত জুনের হামলার পর তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও ইউরোপীয় দেশগুলো একটি কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য সেই প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ডিবিসি/এফএইচআর