মানুষের যে কোনো ধরনের প্রেশার থাকুক না কেন এক্ষেত্রে খাদ্য অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লো প্রেশারে এক ধরনের খাদ্য তালিকা আবার হাই প্রেশারে আরেক ধরনের খাদ্য তালিকা হয়ে থাকে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই আপনাকে সঠিকভাবে মেনে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
আমরা কমবেশি সবাই জানি হৃদপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার বলে। একটা পরিবারে একজন না একজনকে পাওয়া যাবে যার উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার রয়েছে। তাই সবার জেনে রাখা প্রয়োজন সঠিক খাদ্য গ্রহণের নিয়ম। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার তারেক আহমেদ চৌধুরী।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে আমরা প্রথমেই ভাবি, তার রক্তচাপ বেড়ে গেল কি না। এই রক্তচাপ দিয়ে মূলত বোঝানো হয় ব্লাড প্রেশার অর্থাৎ দেহের ভেতরে প্রবাহিত রক্তের চাপ। ধমনীগুলোতে রক্তের চাপ বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার বলে।’
তিনি জানান, উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশারকে নীরব ঘাতক বলা হয়। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগে থাকেন। শুধু বয়স্ক নন, যেকোনো বয়সের মানুষেরই হাই ব্লাড প্রেশার থাকতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভাসের ঘাটতির কারণে যে কারোরই এটি হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্টফেল, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে।
কীভাবে বুঝবেন উচ্চ রক্তচাপ: মাথাব্যথা,মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড় এরকম কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। কিন্তু যদি কারো রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিলিমিটার মার্কারি বা তারচেয়ে বেশি হয় এক্ষেত্রে বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। বয়সভেদে এ মাত্রা কিছু কম অথবা বেশি হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন: প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রচুর শাকসবজি যেমন পালংশাক, ফুলকপি, শসা, লাউ, মটরশুঁটি, কলমি শাক, বাঁধাকপি, টমেটো, কুমড়া, বেগুন ইত্যাদি রাখতে হবে। শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কলা, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদিতে পটাশিয়াম থাকে। এক কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারে প্রতিদিন।
তৈলাক্ত মাছ পরিহার করে অন্য ছোট মাছ খেতে হবে।
এ ছাড়া ফলমূল যেমন আমলকি, নাশপতি, পেঁপে, বেদানা, পেয়ারা এগুলোর মধ্যে যেকোনো এক ধরনের ফল প্রতিদিন গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করতে হবে এবং খাদ্যাভাস ঠিক রাখতে হবে।
কী খাবেন না: প্রথমত খাবারে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে। কাঁচা লবণ একেবারেই খাওয়া যাবে না। এমনকি রান্না করা খাবারেও লবণের পরিমাণ কমাতে হবে। চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। যেমন গরু, খাসির মাংস, মাখন, পেস্ট্রি, কেক ইত্যাদি। অতিরিক্ত কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। প্যাকেটজাত খাবার বাদ দিতে হবে। ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে। সংবাদটি তৈরিতে ডেইলি স্টার বাংলা সংবাদ মাধ্যম থেকে তথ্য সহায়তা নেয়া হয়েছে।
ডিবিসি/কেএলডি