আবার প্রাণ ফিরেছে বরিশালের শাপলার বিলে। মৌসুমের শুরুতে দর্শনার্থী কম হলেও, এখন ব্যাপকভাবে পর্যটক টানছে শাপলার বিল। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন বিস্তীর্ণ বিলের পানিতে ফুটে থাকা লাল সাদা আর নীল শাপলা ফুল দেখতে।
যতদূর চোখ যায়, শুধু লাল আর লাল, চোখ ধাঁধানো লাল। প্রকৃতির এই রূপ বরিশালের উজিরপুরের বিল অঞ্চল সাতলায়। নগরী থেকে সড়ক পথে ৬৭ কিলোমিটার দূরে, এই শাপলা বিল। বর্ষার ছয় মাস নিচু জমিতে কোমর পানি। আর এতেই প্রকৃতির এই দান।
শাপলা সৌন্দর্য উপভোগে প্রতি ভোরেই ছুটেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। মিলেমিশে একাকার হতে চান প্রকৃতির রঙে। বিলে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, 'শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য চিন্তা করলে তো চলবে না, মানসিক ব্যাপারও দরকার আছে। শুধু বিনোদনের জন্যই এখানে আসা।'
আরো এক দর্শনার্থী বলেন, 'এখানে এমন এক পরিবেশ তৈরী করা উচিত যেন মানুষ দূর থেকে এখানে এসে শান্তি পায়।'
পর্যটকদের স্বাগত জানাতেই ছোট ছোট নৌকার ঘাট। ঘণ্টা হিসেবে ভাড়ায় বিলজুড়ে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ। এক নৌকা চালক জানান, 'ভোর ৫টায় এখানে আসি। অনেক দূর থেকে লোকজন এখানে আসে। ঘাট একটু সাজিয়েছি। এই দিয়ে আমার সংসার চলে।'
শাপলা বিলকে আরো দর্শনীয় করার কথা জানান বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয় রহমান। তিনি বলেন, 'পর্যটন করপোরেশনে প্রকল্প দাখিল করেছি, তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আম মনে করি পর্যটকদের জন্য এখানে ফ্রেশরুম-ওয়াশরুমসহ সব সুযোগ-সুুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।'
শুধুই কি মনের খোরাকি? চিকিৎসক বলছেন, খাদ্যগুণে শাপলায় রয়েছে নানা উপকারিতাও। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা: ভাস্কর সাহা বলেন, 'প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলার মধ্যে খাদ্যপ্রাণ রয়েছে ১৪২ কিলোক্যালরি। বলা হয়ে থাকে এই শাপলার মাধ্যমে আমাদের পেটের মধ্যে উদরাময়, আমাশয় এই ধরনের সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়া অ্যালার্জিও উপশম হয়।'
রাতে ফোঁটা শাপলা, ধীরে ধীরে বুজে যায় রোদে। তাই শাপলা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের সময় সূর্য প্রখর হওয়ার আগে।