লাইফস্টাইল

এই বাজে অভ্যাসগুলো আপনাকে ধ্বংস করতে যথেষ্ট

লাইফস্টাইল ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২৩শে আগস্ট ২০২৩ ০৫:০২:০৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

প্রাত্যাহিক জীবনে আমরা নিজের অজান্তেই কিছু বদ অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যাই। এসব বাজে অভ্যাস আমাদের নানাভাবে ক্ষতি করে থাকে। কিছু বাজে অভ্যাস জীবনে উন্নতিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। সফল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে চাইলে অবশ্যই কোনো বাজে অভ্যাস গড়ে তোলা যাবে না।

একজন মানুষের একাধিক বাজে অভ্যাস থাকতে পারে। কিছু কিছু বাজে অভ্যাস তো মানুষের জীবনে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অধিকাংশ মানুষ যেসব বাজে অভ্যাসের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যান তা নিচে তুলে ধরা হলো। এসব বাজে অভ্যাস থেকে নিজেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে।

হাতের নাগালে ইন্টারনেট সেবা সহজ হওয়ায় আমরা স্মার্টফোনের পিছনে বেশি সময় দেই। ধরুন রাত ১০টায় ঘুমাতে গেলেন। ভাবলেন, ফেসবুকটা একটু ঘুরে আসি। ভেবেছিলেন নোটিফিকেশনগুলো চেক করেই ঘুমিয়ে পড়বেন। কিন্তু তারপর একসময় আপনি ঘড়ির দিকে তাকালেন, ১২টা পার হয়ে গেছে দেখলেন।

আবার ঘুম থেকেই উঠেই আমরা মোবাইলের দিকে তাকাই। নানা কিছু চেক করার চেষ্টা করি। এ ভুলটা ভুলেও করা যাবে না। কেননা দিনের সবচেয়ে সুন্দর আর ইতিবাচক সময় সকাল। সকালে উঠেই ফোন হাতে তুলে নিয়ে শুরুতেই মনোযোগ অন্যদিকে দেওয়ার কোনো দরকার নাই। 


খুব সহজেই মানুষকে বিচার করাটা খুবই খারাপ অভ্যাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদেরকে আরও বেশি করে এই বাজে অভ্যাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আপনি যখন জাজমেন্টের শিকার হন, তখন কেমন লাগে?

সবকিছুতেই দেরি করে করার অভ্যাসটা খুবই খারাপ। যেমন, ঘুমাতে যাওয়া, সকাল ১০টায় ঘুম থেকে ওঠা, ভাইভা দিতে গিয়েও দেরি, অফিসে দেরি, বাচ্চার জন্মদিনের পার্টিতে দেরি, কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দেরি। এরকম নানা প্রয়োজনীয় কাজে দেরি করলে আপনি ক্রমেই জীবন থেকে ছিটকে পড়েন।

জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই বাজে সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। আপনার যদি কোনো ভালো বন্ধু না থাকে, যদি একটাই বাজে বন্ধু থাকে, আপনি ওই সঙ্গ ছাড়ুন। বইপড়া, গাছের যত্ন নেওয়া, সিনেমা দেখা, ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখা, নতুন কিছু শেখা, পার্কে হাঁটতে যাওয়া, গান শোনা বা কোনো একটা কোর্সে ভর্তি হয়ে যাওয়াসহ নানা কিছু ইতিবাচক বিষয় আছে সেগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। একাকীত্ব কাটাতে অনেক কিছুই করার আছে।

সুযোগ পেলেই অজুহাত দেয়ার অভ্যাসটা খুবই খারাপ। এটি নিয়মিত অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেলে কর্মস্থল থেকে শুরু করে সবজায়গাতেই সমস্যায় দেখা দিতে পারে। অপমান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মনে রাখতে হবে, আপনি যদি অভিযোগ আর অজুহাত দিয়েই চলতে থাকেন, তাহলে আপনি পরিণত ব্যক্তিত্ব নন। জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়াদের সঙ্গে যোগ দেওয়া ছাড়া আপনার গতি নেই।

শরীরকে ভালো লাখতে পরিশোধিত চিনি খাওয়া বাদ দিতে হবে। বাদ দিতে না পারলেও অন্তত কমিয়ে ফেলতে হবে। কেননা শরীর ভালো না থাকলে কোনো কিছুই করে ভালো ফল পাওয়া যাবে না।

 

ভালো খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা একজন সফল ব্যক্তির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। যা মন চাইলো আর খেয়ে ফেললেন তাহলে হবে না। বিশেষ করে জাঙ্ক ফুড পরিহার করতে হবে। কেননা জাঙ্ক ফুডে যে তেল ব্যবহার করা হয়, সেটা বেশিরভাগ সময়ই স্বাস্থ্যকর হয় না। ক্যালরির পরিমাণও অনেক বেশি। চিনি, লবণ, তেল  এ তিনটি উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তার সবই এখানে বেশি থাকে।

 

আমরা অনেকেই কেউ কিছু বললে তাতে না জেনে বুঝেই সমর্থন দিয়ে থাকি। সবকিছুইতেই সবকিছুতেই ‘হ্যাঁ’ বলে থাকি। এটিই খুবই খারাপ অভ্যাস। না বলতে শিখতে হবে। নইলে বিপদে পড়ার শঙ্কা থাকে। এই হ্যাঁ আপনার অজান্তেই বড় সমস্যায় ফেলতে পারে আপনাকে।
 
অতিরিক্ত নেতিবাচক চিন্তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এ অভ্যাসটা যত দ্রুত মুছে ফেলা যায় ততই মঙ্গল। সবকিছুতেই নেতিবাচক ভাবনা আপনাকে শুধু হতাশাই দিবে। তাই সব সময় বাস্তব চিন্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে।

 

এমনটি হতেই পারে কারও সঙ্গে আপনার গুরুত্বপূর্ণ সভা রয়েছে, কিন্তু যার সঙ্গে সভা করার কথা ওই ব্যক্তিটি আসলেন না। তাকে ফোনেও পাওয়া গেল না। আপনি ধরে নিলেন, তিনি আপনাকে উপেক্ষা করছেন। এমনটিও তো হতে পারে তার কোনো কারণে আসতে দেরি হচ্ছে, তাড়াহুড়োয় খেয়ালই করেননি যে ফোনটা সাইলেন্ট। ইতিবাচকতা ধরে রাখুন। বা উনার বড় কোনো সমস্যা হয়েছে।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা নেতিবাচক ভাবনা থেকে নিজেকে যতটুকু সম্ভব সরিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজনে ধ্যান করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক শ্রেণির মানুষ আছেন যারা কোনো কিছু হতে যাওয়ার আগেই নেতিবাচক ধারণা নিয়ে বসে থাকে। জীবনে ঘটেনি, এমন সব বিষয় চিন্তা করে তারা দিনের একটা বড় অংশ তো নষ্ট করে ফেলেন। পাশাপাশি ক্ষতি করেন ফেলেন নিজের মানসিক, শারীরিক স্বাস্থ্য ও সৃজনশীলতাকে।

আর একটি বড় বাজে অভ্যাস একটু পরে করছি বলে ওই কাজটাকে ভুলে যাওয়া বা অবহেলা করে না করা। নিজেই একটু বিশ্লেষণ করে দেখেন, যে এই ‘একটু পরে করছি’ বলে যেসব কাজ আপনি ফেলে রাখেন, সেগুলোর কতটি আপনি পরে করতে পেরেছেন। জীবনে সফলত হতে হলে এই চর্চা থাকা উচিত। 

আমরা অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রশংসা করে ফেলি। এতে যার প্রশংসা করি সেও বিব্রত হতে পারেন। পাশাপাশি অনেকেই এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখেন। কেউ কেউ বলেই ফেলেন যে স্বার্থের জন্য তিলকে তাল বানিয়ে ফেলেন ‘এই ব্যক্তি’। তাই নিজের ব্যক্তিত্বকে ধরে রাখতে এ অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন