রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুরো মার্কেট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই অগ্নিকাণ্ডে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি আশঙ্কা করছেন প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী।
এ ঘটনায় তাড়াতাড়ি করে কাপড় উদ্ধার করছে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা। লাখ লাখ টাকার কাপড় এক বস্তাতেই। কোটি টাকার কাপড় নিরাপদে নিয়ে যেতে পারছে এই টিম। হঠাৎ পাশে থেকে এক বুড়া মানুষ বলে উঠল বাবা ‘এই বুড়া মানুষের মালগুলো একটু সরায় দিবা? রাতে যদি আবার আগুন লাগে। যতটুকু বাঁচছে, সেগুলো বের করে দাও, বাবা...’
তিনি বলেন, ‘এখানে চোরের উৎপাতও আছে। তাই আতংকে আছি। সেজন্য পণ্যগুলো নিরাপদে সরাতে চাই। একটু সাহায্য করো বুড়ো মানুষটাকে।’
বিনামূল্যে অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য আগুনে পুড়ে যাওয়া পোশাক কিনছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। কিনে নেওয়া এই পোশাকগুলো আগুনে পুড়লেও পোশাকগুলো যেন পরার উপযোগী হয়। তাতে হাসি ফুটিবে কিছু পরিবারে। রমজান শেষে ঈদ, হয়তো এই আনন্দেই বিলিন হয়ে যাবে পোড়া পোশাকের গন্ধ।
আজ মঙ্গলবার (৪ঠা এপ্রিল) ফেসবুক পেজে বিদ্যানন্দ বলেন, আগুনে দাগ লেগে যাওয়া একটা কাপড় কি আপনার ঈদের বাজেট থেকে কিনতে চাইবেন? একটু দাগ না হয় থাকছে কাপড়ে, কিন্তু একটা সংসারের কষ্টের দাগ তো মুছবে! বিক্রির অনুপযোগী কিন্তু পরার উপযোগী, এমন কাপড় বিদ্যানন্দ কিনে নিতে চায় বিনামূল্যে বিতরণের জন্য। পরিবেশগত কারণে এগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত চাই।
এর আগে বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৫০টি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি সেনা ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল, নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল ও একটি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় পুরো বঙ্গবাজার। এতে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন। একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যান কোনো কোনো ব্যবসায়ী।
বাতাসের জন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের। বঙ্গবাজারের টিনশেড দোতলা মার্কেট পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে ভয়াবহে এই আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে দেখা দেয় পানির সংকট। আগুন নেভাতে হাতিরঝিল থেকে পানি আনা হয়। আগুন নেভাতে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে ওপর থেকে পানি ছিটানো হয়।
ডিবিসি/ এইচএপি