এক দুটি নয়, এক জীবনেই করেছেন ২৬০০ মামলা! শুধু তাই নয়, এতসব মামলার কারণে 'বিশ্বের সবচেয়ে মামলাবাজ ব্যক্তি' -এর খেতাব দিয়েছিলো যে প্রতিষ্ঠান সেই গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিরুদ্ধেও মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন। এই মামলাতেও তিনি জয়ী হন এবং ৫০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ আদায় করেন। এক কথায় সত্যিকারের মামলাবাজ বলতে যা বোঝায় আমেরিকান নাগরিক জোনাথন লি রিচেস ছিলেন তা-ই।
কেনটাকির বাসিন্দা রিচেস তার জীবনে অসংখ্য মামলা করেছেন। তার মামলার শিকার হয়েছেন আপন মা, বন্ধু, বিচারক থেকে শুরু করে বিল বেলিচিক, মার্থা স্টুয়ার্ট, ব্রিটনি স্পিয়ার্সের মত ব্যক্তিরাও। এমনকি আইফেল টাওয়ারও তার মামলার ছোবল থেকে রেহাই পায়নি! এসব মামলা জিতেই তিনি পকেটে ভরেছেন বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৯৮ কোটি টাকা।
তবে রিচেসের দাবি তার মামলার সংখ্যা মোটেই ২৬০০ আশেপাশে নয়। তার মতে, এ পর্যন্ত ৫,০০০-এর বেশি মামলা করেছেন তিনি। জীবনে তিনি সঠিক মানুষ হতে পারেননি, এই অভিযোগে নিজের মায়ের বিরুদ্ধে ঠুকে দিয়েছিলেন প্রথম মামলাটি। আশ্চর্যজনকভাবে, সেই মামলায় তিনি জিতে যান এবং ২০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পান। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। একেরপর এক মামলা করে গেছেন বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে।
গিনেস কর্তৃপক্ষ যখন তাদের ২০১০ সালের সংস্করণে তাকে 'সবচেয়ে বেশি মামলাপ্রিয় ব্যক্তি' হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনা করে, তখন রিচেস তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করেন। তিনি দাবি করেন যে, গিনেস তার আইনি কাজগুলো প্রকাশ করার কোনো অধিকার রাখে না, যেগুলোকে তিনি তার 'legal masterpieces' বলে মনে করেন। তিনি অভিযোগ করেন, গিনেস তার মামলার সংখ্যা ২,৬০০ বলে উল্লেখ করেছে, যা ভুল। আসল সংখ্যা ৫,০০০-এর বেশি। এই মামলাতেও তিনি জয়ী হন এবং ৫০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ আদায় করেন।
রিচেসের আইনি বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। গিনেসের বিরুদ্ধে মামলা চলার সময় তিনি ইলেকট্রনিক্স মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগে কেন্টাকির লেক্সিংটনের একটি ফেডারেল কারাগারে বন্দি ছিলেন। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আবার মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮ সালে অ্যারিজোনার একটি ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরি তাকে গ্যাবি গিফোর্ডস নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে মামলা করার চেষ্টার জন্য অভিযুক্ত করে।
২০১৮ সালে তিনি তার মামলাগুলোর একটি সংকলন এবং 'নাথিং ইজ রিটেন ইন স্টোন: এ জোনাথন লি রিচেস কম্প্যানিয়ন' নামে একটি আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। তার এই কাহিনী আইনি ইতিহাসে একটি অদ্ভুত অধ্যায় হয়ে রয়েছে।
তথ্যসূত্র: এবিসি নিউজ
ডিবিসি/এমএআর