চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান ঘটছে।
আজ রবিবার (১০ই আগস্ট) সকাল ১০টায় একযোগে সকল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে খাতা চ্যালেঞ্জের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ফলাফল তুলনামূলক খারাপ হওয়ায় এবং বিগত ১৬ বছরের মধ্যে পাসের হার সর্বনিম্ন হওয়ায় এ বছর রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেন, যার ফলে তাদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াও আটকে ছিল।
এ বছর ফল পুনর্নিরীক্ষণে আবেদনের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শুধুমাত্র ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডেই ৯২ হাজার ৮৬৩ জন শিক্ষার্থী তাদের ফল চ্যালেঞ্জ করেছেন। এই শিক্ষার্থীরা এক বা একাধিক বিষয়ে আবেদন করায় মোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪টি উত্তরপত্র পুনর্নিরীক্ষণের জন্য জমা পড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ঢাকা বোর্ডে আবেদনকারীর সংখ্যা ২১ হাজার ৮২৯ জন বেশি এবং খাতা চ্যালেঞ্জের সংখ্যা ৪০ হাজার ১২১টি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তুষ্টির চিত্রই তুলে ধরে।
যেভাবে জানা যাবে খাতা চ্যালেঞ্জের ফল
শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই মোবাইল ফোন এবং নিজ নিজ বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংশোধিত ফলাফল জানতে পারবেন। যাদের ফলাফলে পরিবর্তন আসবে, তাদের মোবাইল নম্বরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ড: মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে একটি স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর (যেমন, ঢাকার জন্য DHA) লিখে আবার স্পেস দিয়ে রোল নম্বর টাইপ করতে হবে। এরপর একটি স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর (যেমন, 2024) লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানানো হবে। (উদাহরণ: SSC DHA 123456 2024)।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড: দাখিল পরীক্ষার্থীদের ফলাফল পেতে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ জন্য Dakhil লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর এবং স্পেস দিয়ে বছর লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফলাফল প্রকাশের পর নিবন্ধিত নম্বরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফল পৌঁছে যাবে। (উদাহরণ: Dakhil Mad 123456 2024)।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড: কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য SSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর এবং স্পেস দিয়ে বছর লিখে 16222 নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। (উদাহরণ: SSC Tec 123456 2024)।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা প্রচলিত আছে যে, খাতা চ্যালেঞ্জ করা হলে উত্তরপত্রটি নতুন করে মূল্যায়ন করা হয়। তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধারণাটি সঠিক নয়। ফল পুনর্নিরীক্ষণের ক্ষেত্রে মূলত চারটি বিষয় যাচাই করা হয়:
১. উত্তরপত্রের সকল প্রশ্নে নম্বর সঠিকভাবে প্রদান করা হয়েছে কি না।
২. প্রাপ্ত নম্বর গণনায় কোনো ভুল আছে কি না।
৩. প্রাপ্ত নম্বর সঠিকভাবে ওএমআর (OMR) শিটে তোলা হয়েছে কি না।
৪. প্রাপ্ত নম্বরের বিপরীতে ওএমআর শিটের বৃত্ত সঠিকভাবে ভরাট করা হয়েছে কি না।
এই চারটি ক্ষেত্রে কোনো গরমিল বা ভুলত্রুটি পাওয়া গেলে তা সংশোধন করে নতুন ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১০ই জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১১ই জুলাই থেকে ১৭ই জুলাই পর্যন্ত চলে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন প্রক্রিয়া। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ সংশোধিত ফল হাতে পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
ডিবিসি/এএমটি