টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসেম্বলিতে যোগ না দেয়ায় ৫ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৩ মার্চ) ঘটনা ঘটলেও তা প্রধান শিক্ষক ভয় দেখিয়ে ধামাচাপা দিয়ে রাখেন। তবে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে লামিয়া পায়ে গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত অসুস্থ হয়েও ভয়ে স্কুলে না আসায় আজ ঘটনা জানাজানি হয়।
জানা গেছে, ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে প্রত্যাহিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেরি হওয়ায় কয়েকজন ছাত্রী গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে সমাবেশ শেষ হলে তারা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতেই প্রধান শিক্ষক তাদের এলোপাথাড়ি বেত্রাঘাত করে। এর কিছুক্ষণ পর ৬ষ্ঠ শ্রেণির ‘ক’ শাখার ছাত্রী উম্মে লামিয়া বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে তাকে বেত্রাঘাত করা হয়। এতে তার পায়ে গুরুত্বর জখম হয়। পরে তার পা ফুলে গেলে সে টিফিনের সময় বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানায়। এরপর থেকে ভয়ে ওই ছাত্রী আর বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থী উম্মে লামিয়া জানায়, মা প্রতিদিন আমাকে বিদ্যালয়ে দিয়ে আসে। কিন্তু সোমবার আমার বড়বোনকে প্রাইভেটে রেখে আসতে দেরি হয়। এতে আমারও বিদ্যালয়ে যেতে দেরি হয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশের আগেই দেখি অ্যাসেম্বলি শুরু হয়েছে। তাই মা ও আমি বিদ্যালয়ের গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। পরে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পরই প্রধান শিক্ষক বেত দিয়ে পিটাতে থাকে। এতে পায়ে জখম হয়ে ফুলে গিয়ে কালো দাগ হয়েছে। ফলে হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই বিদ্যালয়ে যাচ্ছি না।
লামিয়ার মা রোজিনা বেগম বলেন, মেয়ে অসুস্থ থাকায় প্রতিদিন তাকে বিদ্যালয়ে দিয়ে আসি। সেদিন বড় মেয়েকে প্রাইভেটে দিয়ে আসতে দেরি হওয়ায় ছোট মেয়েকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে দেরি হয়। পরে মেয়ে দুপুরে টিফিনের সময় এসে জানায় তাকে বেত্রাঘাত করেছে প্রধান শিক্ষক। পরে দেখি মেয়ের পায়ে কালো জখম হয়েছে ও পা ফুলে গেছে। এরপরই মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। মেয়েটা ভয় পাওয়ায় বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছি না। আমিও ভয়ে কোনও অভিযোগ করতে পারছি না।
ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ব্যস্ততার অযুহাত দিয়ে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করা অপরাধ। ছাত্রীকে বেত্রাঘাত করার ঘটনায় কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিবিসি/এএসডি