প্রায় ৭৫ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের দুই ছেলেসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহির এবং সাবেক উপ-কর কমিশনার আমিনুল ইসলাম। এছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাত কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- ব্যাংকটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হেলাল উদ্দিন, শাখা প্রধান মুহাম্মদ আমির হোসেন, প্রাক্তন এসএভিপি মো. আহসানুল হক, প্রাক্তন এসএভিপি রুহুল আবেদীন এবং কর্মকর্তা শামীমা আক্তার, মো. আনিস উদ্দিন ও গাজী মুহাম্মদ ইয়াকুব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি ও অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে ভুয়া পে-অর্ডার তৈরি করে সেটিকে আসল হিসেবে ব্যবহার করেন। ৫০০ কোটি টাকার অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার জন্য যেখানে ১২৫ কোটি টাকা আয়কর পরিশোধ করার কথা ছিল, সেখানে তারা মাত্র ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। এর মাধ্যমে সরকারের ৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে এস আলমের দুই ছেলের আয়কর নথিতে বাড়তি সুবিধা দেওয়া এবং এর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর বিভাগের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।
সরকার ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ কর হার বিবেচনায় নিলে, আশরাফুল ও আসাদুল আলমের ৫০০ কোটি টাকার অপ্রদর্শিত অর্থের বিপরীতে অন্তত ১২৫ কোটি টাকা কর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা মাত্র ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করে সেই অর্থ বৈধ করেন।
ডিবিসি/এনএসএফ