বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের অন্যতম প্রতীক মনিপুরী শাড়ি। শত বছরের ঐতিহ্য, রঙ আর নকশায় ভরপুর এই পোশাক সম্প্রতি জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু সেই স্বীকৃতির মর্যাদা এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে নিম্নমানের নকল মনিপুরী শাড়ি। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রকৃত তাঁতিরা এবং হারাচ্ছে ঐতিহ্যের জৌলুস।
রঙিন সুতা, কাঠের তাঁত আর কারিগরের ব্যস্ত হাতে বোনা হয় মণিপুরী শাড়ি। এই শিল্প শুধু পোশাক নয়, বহন করে একটি জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাস ও সংস্কৃতি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাঁতিরা তাদের ঘরে বসেই বুনে চলেছেন রঙের নকশায় গাঁথা ঐতিহ্য।
সম্প্রতি মনিপুরী তাঁতের শাড়ি বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও এখন যে কেউ দেশের যেকোনো জায়গায় মনিপুরী শাড়ি বানিয়ে বিক্রি করছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ছেন প্রকৃত মনিপুরী তাঁতিরা। হাতে বোনা শাড়ি যেখানে তৈরি হয় তিন দিনে, সেখানে বাজারে মেশিনে বানানো একই নকশার কাপড় আসছে কয়েক ঘণ্টায়। দামও তুলনামূলক কম হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
মনিপুরী শাড়ির উৎপত্তি সিলেট অঞ্চলে বসবাসরত মনিপুরী সম্প্রদায়ের হাত ধরে, যাদের বেশিরভাগের বাস মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায়। জেলা প্রশাসন সেই ঐতিহ্যের জৌলুস ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মনিপুরী তাঁতি পরিবারের জীবন চলে এই শিল্পের ওপর। নকল পণ্যের দৌরাত্ম্যে এরই মধ্যে অনেকেই বদলে ফেলছেন পেশা।
ডিবিসি/পিআরএএন