গত কয়েক মাস ধরেই এআই কোডিং স্টার্টআপ 'উইন্ডসার্ফ'-কে কেনা নিয়ে ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। ৩ বিলিয়ন ডলারের এই চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার পথেই ছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে এই চুক্তির এক্সক্লুসিভিটি পিরিয়ড শেষ হতেই পাশা পাল্টে যায়। ওপেনএআই-এর চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভেস্তে যাওয়ার খবর আসার পরপরই গুগল ঘোষণা করে, তারা উইন্ডসার্ফের সিইও বরুণ মোহন, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডগলাস চেন এবং কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় এআই গবেষকদের গুগল ডিপমাইন্ডে নিয়োগ দিচ্ছে।
গুগলের মুখপাত্র ক্রিস পাপ্পাস এক বিবৃতিতে জানান, "এআই কোডিং-এ আমাদের কাজকে আরও এগিয়ে নিতে উইন্ডসার্ফের প্রতিভাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।" ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই নিয়োগ এবং উইন্ডসার্ফের প্রযুক্তি ব্যবহারের লাইসেন্স পেতে গুগল ২.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। ওপেনএআই এর জন্য এটি একটি বড় পরাজয়, কারণ তারা শুধুমাত্র একটি সম্ভাবনাময় কোম্পানিকেই হারায়নি, বরং তাদের প্রধান প্রতিযোগী গুগলকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
গুগলের এই পদক্ষেপটি হলো 'রিভার্স-অ্যাকুইহায়ার'-এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই প্রক্রিয়ায়, একটি বড় কোম্পানি কোনো ছোট স্টার্টআপকে সরাসরি না কিনে, বিপুল অর্থের বিনিময়ে তার সেরা কর্মী এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের লাইসেন্স নিয়ে নেয়। এর ফলে বড় কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি বা অ্যান্টি-ট্রাস্ট মামলা এড়িয়ে সহজেই নিজেদের শক্তি বাড়াতে পারে।
এই চুক্তির ফলে উইন্ডসার্ফের ভবিষ্যৎ এখন গভীর অনিশ্চয়তার মুখে। কোম্পানির সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা গুগলে যোগ দেওয়ায়, ব্যবসার প্রধান জেফ ওয়াংকে অন্তর্বর্তীকালীন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। কোম্পানির ২৫০ জন কর্মীর অধিকাংশই উইন্ডসার্ফেই থেকে যাচ্ছেন, কিন্তু নেতৃত্ব এবং মূল উদ্ভাবকদের ছাড়া তারা আগের মতো সাফল্য ধরে রাখতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এর আগে মাইক্রোসফটের সাথে চুক্তির পর 'ইনফ্লেকশন' এবং মেটার সাথে চুক্তির পর 'স্কেল এআই'-এর মতো স্টার্টআপগুলোকেও কঠিন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছিল।
দ্রুত লাভ করা উইন্ডসার্ফ, যার বার্ষিক আয় মাত্র কয়েক মাসে ৪০ মিলিয়ন ডলার থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল, সেই কোম্পানির এই পরিণতি টেক দুনিয়ায় বড় স্টার্টআপগুলোর ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এসেছে। তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চ
ডিবিসি/জেআরওয়াই