সন্তান প্রসব আর স্বামীসেবার বাইরে নারীরা অন্য কোনো কাজ করতে পারবে না- প্রায়ই এমন ফতোয়া দেয়া হচ্ছে ওয়াজ মাহফিল থেকে। এমনকি, নারীর পোশাক ও শরীর নিয়ে নানা আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন অনেক ওয়াজকারী। এ ধরনের বক্তব্যকে নারী প্রগতির বিরুদ্ধে মৌলবাদীদের ষড়যন্ত্র বলছেন নারী অধিকারকর্মীরা। আর ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, নারীকে ঘরে বন্দী করে রাখা বা নারী অবমাননা ইসলাম সমর্থন করে না।

ওয়াজে বক্তারা বলছেন, নারীদের সৃষ্টিকরা হয়েছে শুধু স্বামী সেবা করা, সম্মান করা আর সন্তান প্রসবের জন্য।

তবে, জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন জানান, নারী তার নিজের সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষা করে যে কোনও কাজ করতে পারবে।

আবার ওয়াজে গর্ভবর্তী নারীদের ঘরের সকল কাজ এক হাতে করার পরামর্শ দিচ্ছেন এসব বক্তারা। তবে, গর্ভবতী নারীরা কাজ করতে পারবে কি না এ বিষয়ে ইমপালস হাসপাতালের কলসালটেন্ট (অবস ও গাইনী ডা. ফারজানা হুসেইন বলেন, 'গর্ভবতী নারীরা যেহেতু তার শরীরে একজন শিশুকে বহন করছে তাই পরামর্শ দেয়া হয় কাজের সময় পেটে যেন কোনো চাপ না লাগে। আর ভারি কোনো কাজ করতে নিষেধ করা হয়।'

এসব বক্তারা ছড়াচ্ছেন নানা কুসংস্কার। গ্যাসের চুলায় রান্না করার বিষয়েও আপত্তি আছে কোনো কোনো বক্তার। এছাড়া শিল্পী, মডেল ও সংস্কৃতিজনদের নিয়ে নানা ব্যাঙ্গ বিদ্রুপও করছেন কোনো কোনো ওয়াজকারী।

নারী প্রগতির বিরুদ্ধে এ ধরণের অপপ্রচার রোধে সরকারকে আরও সোচ্চার হওয়ার পরামর্শ নারী অধিকারকর্মীদের।

নারী অধিকারকর্মী রোকেয়া কবীর বলেন, নারী অধিকার বিরোধী বক্তব্য এবং নারীদের যে সমান অধিকার রয়েছে এর বিরুদ্ধে ধারণা পোষণ করার অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলে আঘাত করা। এর বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।