মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির সবচেয়ে বড় মামলায় আরও ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৬শে ডিসেম্বর) কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট তাকে এই দণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২.৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১১.৩৯ বিলিয়ন রিঙ্গিত) জরিমানাও করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
বিচারক কলিন লরেন্স সেকুয়েরা ৭২ বছর বয়সী নাজিব রাজাককে ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি এবং অর্থ পাচারের ২১টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নাজিবের বর্তমান কারাদণ্ডের মেয়াদ ২০২৮ সালে শেষ হওয়ার পর এই নতুন ১৫ বছরের সাজা কার্যকর হবে।
জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করলে তাকে অতিরিক্ত কারাভোগ করতে হবে। আদালত তার ২.০৮ বিলিয়ন রিঙ্গিত সমমূল্যের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দিয়েছে।
দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে রায় পড়ার সময় বিচারক বলেন, নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘কঠোর ও অকাট্য’ প্রমাণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নাজিব দাবি করেছিলেন যে তিনি পলাতক অর্থপাচারকারী ঝো লো এবং অন্যদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলেন এবং ভেবেছিলেন তার অ্যাকাউন্টের অর্থ সৌদি রাজপরিবারের দান। তবে বিচারক এই যুক্তিকে ‘বাস্তব বিবর্জিত কল্পনা’ এবং ‘অবিশ্বাস্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। বিচারক মন্তব্য করেন, নাজিব অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার অধিকারী এবং ঝো লো-এর সাথে তার স্পষ্ট যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা ছিল।
নাজিবের আইনজীবী মুহাম্মদ শাফি আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, তারা সোমবার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। এক বিবৃতিতে নাজিব মালয়েশিয়াবাসীকে শান্ত ও যুক্তিবাদী থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তার আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নাজিব রাজাক বর্তমানে অন্য একটি ওয়ানএমডিবি মামলায় সাজা ভোগ করছেন। এই রায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জোট সরকারের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কারণ নাজিবের দল ইউএমএনও বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের অংশ।
ডিবিসি/আরএসএল