কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর তীর কেটে জায়গা দখলের অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বুধবার দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম বাদি হয়ে সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস।
তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সালের ১৫(১) এর ২ ও ৮ ধারায় প্যারাবন কর্তন এবং জলাশয় ভরাট করে দখল আর স্থাপনা নির্মাণের অপরাধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটি চট্টগ্রামের পরিবেশ আদালতে ন্যস্ত করার আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া মামলাটি পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ তদন্ত কাজ করবেন।
মামলা নথিভূক্ত হওয়ার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর একটি কপি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে মহেশখালী উপজেলার চরপাড়ার মৃত জালাল আহমদের ছেলে মো. ইফছুপ (৪২), কক্সবাজার পৌরসভার টেকপাড়ার মাহবুবুল আলম মুকুলের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান (৩৫), বদরমোকাম এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের মৌলভী কবির আহমদের ছেলে রুকন উদ্দিন (৪০), নেত্রকোনা জেলার মরাদীঘি এলাকার ইদ্দিকুল রহমানের ছেলে ওমর ফারুক (৩৬), কক্সবাজার পৌরসভার নুর পাড়ার মুবিনুল ইসলামের ছেলে তায়েফ আহমেদ (২৮) ও তার ভাই তাইসাদ সাব্বির (৩০), গাড়ীর মাঠ এলাকার জনৈক টিপু (৩৩), ইকরা রিয়েল এস্টেট হাউজিং এর স্বত্তাধিকারী আমিনুল ইসলাম আমান (৪০), কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের মনুপাড়ার মোহাম্মদ সেলিম ওরফে বর্মাইয়া সেলিম (৪০), কক্সবাজার সদর থানার পিছন রোডের হোটেল তাজশেবার মৃত হাজী জমির হোসেনের ছেলে মাহবুবর রহমান (৩৮) এবং একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে জিশান উদ্দিন (৩৫), রুমালিয়াছড়ার বাসিন্দা আব্দুল মোনাফের ছেলে মো. ইসমাঈল (৩৫), মধ্যম বাহারছড়ার শেখ জসিমের ছেলে মোহাম্মদ রানা (৩৪), লালদীঘি পাড় এলাকার মুফিজুল ইসলামের মেয়ে ঝুমা (৪২), মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুরের মো. নাসিমের ছেলে ইকবাল হাসান (৩৫)।
এছাড়াও মামলায় ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ চক্রটি গত ৫ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কস্তুরাঘাট ও নুনিয়ারছড়া এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে ৬শ হেক্টর প্যারাবন রয়েছে। এ প্যারাবনে প্রায় ২০৫ প্রজাতির পাখ-পাখালী ও জলজপ্রাণীর আবাসস্থল। অন্তত দুই দশক আগে ওয়েস্কা ইন্টারন্যাশনাল নামের জাপানের একটি পরিবেশবাদী সংগঠন এই এলাকায় প্রায় ৬শ হেক্টর প্যারাবন সৃজন করেছিল।
কিন্তু গত তিনমাসে এ নদীর প্যারাবন উজাড় করে জমি দখল করে সেখানে নানা স্থাপনা গড়ে তুলে প্রভাবশালী একটি চক্র। এ ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।