একটি কমিক বইয়ের ভবিষ্যদ্বাণীকে কেন্দ্র করে জাপানে ভয়াবহ দুর্যোগের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে হংকং থেকে পর্যটকদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় কয়েকটি বিমান সংস্থা জাপানগামী ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জাপান সর্বকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক আগমনের রেকর্ড গড়ে। এপ্রিলে দেশটিতে ৩.৯ মিলিয়ন পর্যটকের আগমন ঘটে, যা দেশটির পর্যটন শিল্পের জন্য একটি নতুন মাইলফলক ছিল। কিন্তু "দ্য ফিউচার আই স" নামক একটি মাঙ্গা বা কমিক বইয়ের পুরনো ভবিষ্যদ্বাণী নতুন করে ভাইরাল হলে এই চিত্র দ্রুত পাল্টাতে থাকে।
১৯৯৯ সালে প্রথম প্রকাশিত এবং ২০২১ সালে পুনঃপ্রকাশিত এই কমিক বইটিতে রিয়ো তাতসুকি নামের এক শিল্পী তার দেখা স্বপ্নের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দুর্যোগের পূর্বাভাস দেন। বইটিতে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে একটি ভয়াবহ দুর্যোগের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, যা পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করে। বিশেষ করে, বইটির আগের সংস্করণ ২০১১ সালের মার্চ মাসের সুনামির সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল বলে দাবি করা হয়। এই কারণে, এবারের ভবিষ্যদ্বাণীটিকেও অনেকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন।
এই গুজবের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হংকং, যেখানে এই কমিক বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়। ফলস্বরূপ, হংকং থেকে জাপানে পর্যটকদের আগমনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার মতে, জাপান ভ্রমণের জন্য বুকিং প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। পরিস্থিতির অবনতিতে, হংকং-এর বিমান সংস্থা গ্রেটার বে এয়ারলাইন্স এবং হংকং এয়ারলাইন্স জাপানগামী তাদের বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল বা স্থগিত করেছে।
জাপানের জাতীয় পর্যটন সংস্থা এবং বিজ্ঞানীরা এই গুজবকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন, ভূমিকম্প বা সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভবিষ্যদ্বাণী করা বৈজ্ঞানিকভাবে অসম্ভব। পর্যটকদের আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক তথ্যের উপর নির্ভর করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও, এই গুজব জাপানের পর্যটন শিল্পে একটি সাময়িক সংকট তৈরি করেছে।
তথ্যসূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ডিবিসি/এমইউএ