আপনি জানেন কি?

কাক বংশপরম্পরায় প্রায় ১৭ বছর ধরে রাগ পুষে রাখতে পারে

ডেস্ক রিপোর্ট

ডিবিসি নিউজ

৩ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কাক শুধু সাধারণ কোনো পাখি নয়, তারা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং প্রতিশোধপরায়ণ প্রাণী। বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা বলছে, কাকেরা মানুষের চেহারা মনে রাখতে পারে এবং সেই রাগ বংশপরম্পরায় প্রায় ১৭ বছর পর্যন্ত পুষে রাখতে পারে। অর্থাৎ, আপনার করা খারাপ কাজের জন্য আপনার নাতি-পুতিদেরও কাকের আক্রমণের মুখে পড়তে হতে পারে!

অধ্যাপক মারজলুফের যুগান্তকারী পরীক্ষা ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী বিজ্ঞানের অধ্যাপক জন মারজলুফ এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন। তিনি ২০০৬ সালে সিয়াটলে একটি পরীক্ষা শুরু করেন।

 

তিনি এবং তার দল একটি ভয়ংকর 'দানব মুখোশ' পরে কয়েকটি কাককে ধরে পায়ে ব্যান্ড পরিয়ে দেন। অন্য একটি দল আমেরিকার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মুখোশ পরেছিল 'কন্ট্রোল গ্রুপ' হিসেবে।

 

দানবের মুখোশ পরা ব্যক্তিদের দেখলেই কাকেরা আক্রমণ করত, চিৎকার করত। কিন্তু চেনির মুখোশ পরা লোকগুলোকে তারা পাত্তা দিত না।

 

১৭ বছর ধরে 'রাগ' পুষে রাখা অধ্যাপক মারজলুফের গবেষণা অনুযায়ী, বন্য পরিবেশে একটি সাধারণ কাকের গড় আয়ু ৭ থেকে ৮ বছর হলেও, তাদের স্মৃতিশক্তি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়।

 

বংশানুক্রমিক বিদ্বেষ: যে কাকগুলোকে ধরা হয়েছিল, তারা মারা যাওয়ার পরেও, বছরের পর বছর ধরে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম সেই দানব মুখোশ পরা লোকগুলোকে দেখলেই আক্রমণ করেছে।

 

কাকেরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে এবং একটি নতুন কাকও তার পূর্বপুরুষের 'শত্রুকে' চিনতে শিখে যায়।

 

উন্নত মস্তিষ্কের প্রমাণ বিজ্ঞানীরা কাকের মস্তিষ্কের গঠন পরীক্ষা করে দেখেছেন, এদের মস্তিষ্কের 'নিডোপ্যালিয়াম'  অংশটি মানুষের 'প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স'-এর মতো কাজ করে। মানুষের মস্তিষ্কের এই অংশটি সমস্যা সমাধান এবং পরিকল্পনা করার কাজে লাগে। এই কারণেই কাকেরা শিম্পাঞ্জির মতো যন্ত্রপাতি (টুলস) ব্যবহার করতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য খাবার লুকিয়ে রাখার সময় মিথ্যা অভিনয় করে অন্য কাকদের বিভ্রান্ত করতে পারে।

 

কর্নেল ল্যাব অফ অর্নিথোলজির গবেষক কেভিন ম্যাকগোয়ানের অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ। তিনি জানান, ব্যান্ড পরানোর পর থেকে পার্কের শত শত মানুষের মধ্যে শুধু তাকে দেখলেই কাকেরা দলবেঁধে এসে চিৎকার করে আক্রমণ করত।

 

অধ্যাপক মারজলুফ তার ২০১০ সালের গবেষণাপত্রে লিখেছিলেন, কাকেরা লিঙ্গ, বয়স বা উচ্চতা বিচার করে না। তাদের টার্গেট শুধু ওই নির্দিষ্ট চেহারা বা 'ফেস', যার সঙ্গে তাদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা রয়েছে।

 

অতএব, বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন কাকেরা প্রতিশোধপরায়ণ প্রাণী। তাদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।

 

তথ্যসূত্র দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন