বিবিধ

কান কি আদৌ পরিষ্কার করা উচিত? জেনে নিন চিকিৎসকদের বক্তব্য

আবু বকর

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ৬ই ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৩৩:৩৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কান পরিষ্কার করার অভ্যাস অনেকেরই আছে। অনেকেই শিশুদের কানও নিয়মিত পরিষ্কার করে দেন। আর বড়দের ক্ষেত্রে সেফটিপিন থেকে পাখির পালক, কটন বাড ব্যবহার করেন।

আবার কেউ কেউ তো রাস্তার পাশে বসে পড়েন কান পরিষ্কার করার জন্য। কিন্তু একটা বিষয় অনেকেরই জানা নেই যে, এর সবক’টির ব্যবহারই ঝুঁকিপূর্ণ।

কটন বাডকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ভাবা হলেও সেটা ঠিক নয়। এর থেকেও বিপদের সম্ভাবনা থাকে। হয়তো কয়েক দিন আগে খুলে রাখা প্যাকেট থেকে কটন বাড বের করে নিয়ে ব্যবহার করা হল। সেটা বেশ বিপজ্জনক৷ কারণ তাতে ধুলা থাকতে পারে। বাতাসের সংস্পর্শে এসে আর্দ্র হয়ে থাকলেও তা ঝুঁকির। কারণ, আর্দ্রতার কারণে প্যাকেট খুলে রাখা কটন বাডে ছত্রাক জন্মায়। তা থেকে কানে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে৷

এ ছাড়াও অন্য কিছু দিয়ে কান পরিষ্কার করার সময়ে হঠাৎ চমকে উঠলে অসতর্কতাবশত আঘাত লাগতে পারে৷ এমনকি কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে৷ কানের কোনও অসুখের জন্য কান চুলকাতে পারে কিন্তু তার জন্য কটন বাডের ব্যবহার অসুখের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তা হলে কান পরিষ্কার করার উপায় কী? সোজা উত্তর হচ্ছে, সাধারণ ভাবে পরিষ্কার করার কোনও দরকার নেই। প্রাকৃতিকভাবেই শারীরিক কিছু প্রক্রিয়ায় কান আপনাআপনি পরিষ্কার হয়৷ নিয়মিতভাবে কান পরিষ্কার করলে সেই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বাধা তৈরি হয়।

চিকিৎসকরা বলেন, ত্বকের মৃত কোষ ও বাইরের ধুলোময়লা মিলে তৈরি হয় কানের খোল বা ওয়াক্স। প্রকৃতিগতভাবেই কানের সরুপথের ত্বক বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেখানে জমে থাকা তরল ও আঠালো খোলকে কানের বাইরে পাঠায়। চোয়ালের অনবরত নড়াচড়া কানে জমা খোলকে বের করে দেয়। এই দুই প্রক্রিয়ায় বেশির ভাগ লোকের কানে জমতে থাকা খোল বেরিয়ে যায়।

চিকিৎসকরা বলেন, কানের দু’টি কাজ, শোনা এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই কানের যত্ন নেওয়া দরকার। কানের ভেতরের অংশকে রক্ষার জন্য এক ধরনের মোমের মতো বস্তু থাকে। এখন, ধুলাবালির সংস্পর্শে তা থেকেই খোল সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করলে বধিরতাও আসতে পারে। অসাবধানতা বশত কানের ভেতরে পানি ঢুকলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে পুঁজের মতো তরল সৃষ্টি করে। একে কথ্য ভাষায় ‘কানপাকা’ বলে। এ ছাড়াও কানের সমস্যা থেকে মানসিক বিকৃতিও আসতে পারে। তবে সে সবের জন্য কান পরিষ্কার করার বদলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাই জরুরি।

চিকিৎসকের পরামর্শে কানের ‘ড্রপ’ ব্যবহার করে শক্ত ময়লা নরম করতে হবে। পাঁচ-সাত দিন পরপর ড্রপ ব্যবহার করলে উপশম মেলে। তা ছাড়া, খাবার খাওয়ার সময়ে, কথা বলার সময়ে বা হাঁটাচলার সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই কানের পেশির সঞ্চালনে কানের ময়লা বেরিয়ে আসে। বরং তুলা লাগানো কাঠি বা অন্য কোনও সূচালো জিনিস দিয়ে কানের ময়লা পরিষ্কারের চেষ্টা করলে তা কানের আরও ভেতরে চলে গিয়ে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সূত্র: আনন্দবাজার

আরও পড়ুন