বিনোদন, সংস্কৃতি

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন আজ

ডিবিসি ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১লা জুলাই ২০২৪ ০৪:০৫:৫১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বাংলা গানের প্রবাদপুরুষ কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের আজকের দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কলকাতায়। তবে তার কলেজজীবন কেটেছে রংপুর আর ঢাকায়।

তার বাবা সৈয়দ আব্দুল হাই ছিলেন ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) অফিসার। তিনি গান গাইতে এবং শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার গ্রামোফোনে গান শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায় হাদীর। নিজে নিজে গুনগুন করে গাইতেন। আর এভাবেই তার সঙ্গীতচর্চা শুরু।

১৯৫৮ সালে সৈয়দ আব্দুল হাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্‌স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন।

সৈয়দ আব্দুল হাদী দেশাত্ববোধক গানের জন্য জনপ্রিয়। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সঙ্গীত সাধনা করছেন।১৯৬০ সালে ছাত্রজীবন থেকেই চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী একক কণ্ঠে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রে গান করেন। চলচ্চিত্রটির নাম ছিল ‘ডাকবাবু’। মো. মনিরুজ্জামানের রচনায় সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেনের সুরে একটি গানের মাধ্যমে সৈয়দ আবদুল হাদীর চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু।

বেতারে গাওয়া তার প্রথম জনপ্রিয় গান ‘কিছু বলো, এই নির্জন প্রহরের কণাগুলো হৃদয়মাধুরী দিয়ে ভরে তোলো’ সালাউদ্দিন জাকি পরিচালিত ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের গানে সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন লাকী আখ্‌ন্দ। এই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গান ‘সখি চলনা, সখি চলনা জলসা ঘরে এবার যাই’- গেয়েছেন সৈয়দ আবদুল হাদী।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হয় সৈয়দ আবদুল হাদীর প্রথম রবীন্দ্র সংগীতের একক অ্যালবাম ‘যখন ভাঙলো মিলন মেলা’। সৈয়দ আবদুল হাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নিয়ে অনার্স পড়ার সময় সুবল দাস, পি.সি গোমেজ, আবদুল আহাদ, আবদুল লতিফ প্রমুখ তাকে গান শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘যেও না সাথী’, ‘চক্ষের নজর এমনি কইরা একদিন খইয়া যাবে’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’, ‘চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার’,  ‘এমনও তো প্রেম হয়’,  ‘চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার’, ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’  ইত্যাদি।

সৈয়দ আব্দুল হাদী বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে পাঁচবার শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে - গোলাপী এখন ট্রেনে - ১৯৭৮, সুন্দরী - ১৯৭৯, কসাই - ১৯৮০, গরীবের বউ - ১৯৯০ এবং ক্ষমা ১৯৯২। এছাড়া ২০০০ সালে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন।

ডিবিসি/আরপিকে

আরও পড়ুন