রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ শনিবার উত্তর কোরিয়ার ওনসান শহরে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, দুই নেতা উষ্ণ করমর্দন এবং আলিঙ্গন করছেন। এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।
বৈঠকে কিম জং উন ইউক্রেনে রাশিয়ার সকল পদক্ষেপের প্রতি তার দেশের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এই দুই দেশের মধ্যে সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক গভীর করার এটি সর্বশেষ পদক্ষেপ। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পিয়ংইয়ং মস্কোর অন্যতম প্রধান মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই বন্ধুত্বের প্রতিদান হিসেবে উত্তর কোরিয়া কী পাচ্ছে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া। তাদের আশঙ্কা, হাজার হাজার সৈন্য ও অস্ত্রের বিনিময়ে কিম জং উন রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক প্রযুক্তি আদায় করে নিচ্ছেন, যা কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তাকে এক ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে।
এই বৈঠকের প্রেক্ষাপটেই উঠে এসেছে ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সরাসরি জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দাদের মতে, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ছয় হাজারেরও বেশি উত্তর কোরীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। পিয়ংইয়ং শুধুমাত্র সৈন্যই নয়, রাশিয়াকে হাজার হাজার প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্রও সরবরাহ করেছে, যা দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনের কুরস্কের মতো অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, উত্তর কোরিয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা পুনর্গঠনের জন্য ৬,০০০ সামরিক প্রকৌশলী এবং নির্মাতা পাঠাতেও সম্মত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, আগামী জুলাই বা আগস্ট মাসে উত্তর কোরিয়া আরও সৈন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কার্যত, উত্তর কোরিয়া তাদের সৈন্য ও সাধারণ অস্ত্রের বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম আদায় করে নিচ্ছে। ইউক্রেনের মাটি উত্তর কোরীয় সৈন্যদের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার এই খবর দুই দেশের সামরিক জোটের গভীরতা এবং নৃশংসতাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা
ডিবিসি/জেআরওয়াই