ভাস্কর্য নিয়ে যখন দেশে তোলপাড় চলছে, তখন ভিন্ন চিত্র কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম লোহাজুড়িতে।
মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং চিরায়ত লোক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শতাধিক ভাস্কর্যে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে ব্যতিক্রমী মরুদ্বীপ ৭১ স্বাধীনতা পার্ক।
ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন ও তারামন বিবি বীরপ্রতীকের পরামর্শে কষ্টার্জিত টাকায় কটিয়াদীর অজপাড়াগায়ে ২০০৮ সালে নুরুজ্জামান ইকবাল শুরু করেন ভাস্কর্য পার্ক নির্মাণের কাজ। ভাস্কর মৃণাল হকের তৈরি শতাধিক ভাস্কর্য দিয়ে ২০ একর জমির উপর নির্মাণ করেন ব্যতিক্রমী মরুদ্বীপ ৭১ স্বাধীনতা পার্ক।
পার্কটিতে বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে জাতীয় চার নেতা, জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে স্মৃতিস্তম্ভ, ম্যুরালের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরকে। আছে অপরাজেয় বাংলা বা মুজিবনগর, ক্ষুদিরামের ফাঁসির মঞ্চও।
অসংখ্য ভাস্কর্য দিয়ে ঘেরা পার্কটিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সুন্দরভাবে তুলে ধরা হলেও, উগ্র মৌলবাদীদের হাতে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুইবার আক্রান্ত হয়েছে পার্কটি। কিশোরগঞ্জ মরুদ্বীপ ৭১ স্বাধীনতা পার্কের মালিক নুরুজ্জামান ইকবাল বলেন,'এই কাজটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুষ্টচক্রের হাত থেকে বা মৌলবাদীদের হাতে থেকে আমি যেন নিরাপদে থাকতে পারি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই আশ্রয়টুকু চাই।'
ভাস্কর্যের মাঝে মুক্তিযুদ্ধকে খুঁজতে দূরদুরান্ত থেকে অজপাড়াগায়ে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে পার্কটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে দেবার ইচ্ছা নুরুজ্জামান ইকবালের। তিনি আরও বলেন,'যেদিন এখানকার সমম্ত ভাস্কর্যের কাজ শেষ হয়ে যাবে, সেদিন আমি এটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিবো।'
পার্কটির নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। বিজয়ের মাসে মাস্টার দা সূর্য্যসেন, প্রীতিলতা, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও মহাত্মাগান্ধীসহ স্থাপন করা হবে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য।