বাংলাদেশ, রাজধানী

কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার: উপদেষ্টা আসিফের বাবার গ্রেপ্তার চাইলেন ভুক্তভোগী পরিবার

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

১২ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কুমিল্লার মুরাদনগরে মা, ভাই ও বোনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ওই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া রুমা আক্তার।

সোমবার (৪ঠা আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

গত ৩রা জুলাই মুরাদনগরে রুমা আক্তারের মা, ভাই ও বোনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রুমা নিজেও গুরুতর আহত হন, তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, এই হত্যাকাণ্ডের মূল মদদদাতা ছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন। কিন্তু পুলিশ মামলা করার সময় প্রধান আসামির তালিকা থেকে তার নাম বাদ দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো আসামি তালিকা তৈরি করে।

 

রুমা আক্তার জানান, তার মা স্থানীয়ভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন এবং দুইবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপির সমর্থক হওয়ায় এবং তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি প্রভাবশালী মহল আগে থেকেই তাদের পরিবারকে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল।

 

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রুমা বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত হয়। চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে মারধর করা হলে রুমা আক্তারের মা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, "চোরটা যদি মরে যায়, তাহলে তো আমরা সবাই ফেঁসে যাবো। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দাও।" এই কথা বলার পরই স্থানীয় বাচ্চু মেম্বার, রবি, শরিফসহ বেশ কয়েকজন তার মায়ের ওপর চড়াও হয়।

 

পরবর্তীতে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২রা জুলাই রাতে স্থানীয় শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান ও আনু মেম্বারের উপস্থিতিতে এক গোপন বৈঠকে রুমা আক্তারের মাসহ পুরো পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। রুমা বলেন, "মামলার দায়িত্ব উপদেষ্টার বাবার, তার অনুমতি আছে—এই বলে শিমুল চেয়ারম্যান সবকিছু দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। হত্যাকাণ্ডের জন্য অর্থ লেনদেন হয় এবং খুনি ভাড়া করা হয়।"

 

রুমা জানান, ৩রা জুলাই সকাল ৬টায় ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত ব্যক্তিরা তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তার চোখের সামনেই মা, ভাই ও বোনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে মারাত্মকভাবে জখম করা হয়। তিনি বলেন, "আমার মাথায় ৭২টি সেলাই লেগেছে। শরীরের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে তারা আঘাত করেনি। আমি মারা গেছি ভেবেই তারা চলে যায়।"

 

রুমা অভিযোগ করেন, র‍্যাব কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তিনি বলেন, "উপদেষ্টা আসিফের বাবার প্রত্যক্ষ মদদে শিমুল চেয়ারম্যান এখনো অধরা। আমরা শুনেছি, তাকে উপদেষ্টা আসিফের বাসাতেই লুকিয়ে রাখা হয়েছে।" পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে বিল্লাল মাস্টারের নাম এজাহার থেকে বাদ দিয়েছে এবং অনেক অপরাধীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেনি বলেও তিনি দাবি করেন।

 

ডিবিসি/আরএসএল 

আরও পড়ুন