কুয়েতের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জিলিব আল-শুয়েখ এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই ঘটনায় জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আটক ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশি হকার ও ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করছে। মূলত যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে চক্রের এক সদস্যকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। কুয়েতি পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তি একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তার সহযোগীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, কুয়েতের আইন অনুযায়ী ফুটপাত বা খোলা জায়গায় লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা নিষিদ্ধ। কিন্তু জিলিব আল-শুয়েখ এলাকায় বহু প্রবাসী বাংলাদেশি জীবিকার তাগিদে সবজি, মাছ ও খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু বাংলাদেশি সেখানে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলেই বিক্রেতাদের হুমকি ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো।
এদিকে, চাঁদাবাজির এই ভিডিও কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। এর জেরে সাধারণ প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, একটি অপরাধী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের দায় পুরো কমিউনিটির ওপর আসতে পারে, যা তাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে উল্লেখ্য, এর আগেও বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আইন অমান্যের অভিযোগে কুয়েত সরকার ২০০৬ সাল থেকে দীর্ঘদিন ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছিল।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ধরনের অপরাধকে দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপ দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিবিসি/এএনটি