বাংলাদেশ, শিক্ষা

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে সাপের উপদ্রব, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৫শে জুলাই ২০২৫ ০৬:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বেড়েছে বিষধর সাপের উপদ্রব। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল এবং বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের পাশে বিভিন্ন ধরনের বিষধর সাপের দেখা মিলছে। বিশেষ করে রাতের বেলা শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে নিরাপত্তা শঙ্কা বোধ করছেন। এছাড়া লালন শাহ হলে বিষাক্ত খৈয়া গোখরা সাপের দেখা মিলছে।

বৃহস্পতিবার (২৪শে জুলাই) দিবাগত রাত ১টার দিকে আধ ঘণ্টায় লালন শাহ হলের ফ্লোরে তিনটি সাপ দেখা গেলে শিক্ষার্থীদেও মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে এন্টিভেনম ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও হল এলাকায় পাতি কাল কেউটে, কালাচ বা দেশি কালাচ, পদ্ম গোখরা ও খৈয়া গোখরা সাপের দেখা মিলছে। এদিকে বিগত এক সপ্তাহে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে একটি ফাটল থেকে ১৪ টির মতো সাপ দেখা গিয়েছে। পরে হল কর্তৃপক্ষ সেই ফাটল বন্ধ করে দেয় এবং প্রতিটি রুমে কার্বোলিক এসিড রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে রাতের বেলা এমন সাপের উপদ্রব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এছাড়া মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা না থাকায় আরও বেশি আতঙ্কিত তারা।

 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যতিত এন্টিভেনম ব্যবহারের অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছেন চীফ মেডিকেল অফিসার। এন্টিভেনম ব্যবহারে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং সাপোর্টিভ চিকিৎসা না থাকায় ইবির চিকিৎসা কেন্দ্রে এন্টিভেনম ব্যবহার করা হয় না বলে জানান তিনি। মেডিকেলে এন্টিভেনম রাখা এবং তা প্রয়োগ করার স্পেশালিষ্ট নিয়োগ, ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও ক্যাম্পাসের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ্ এন্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত বিষাক্ত সাপ দেখা যাওয়ায় সবাই আতঙ্কিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে এন্টিভেনম দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকা আরও উদ্বেগজনক। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের মেডিকেল প্রাইমারি সেন্টার হওয়ায় সর্পদংশিত কেউ আসলে আমরা তাকে স্যালাইন, ক্যানেলসহ সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া এটি দেওয়া সরকারিভাবে নিষেধ হওয়ায় এখানে এন্টিভেনম প্রয়োগের সুযোগ নেই। সাপে কাটলেই এন্টিভেনম দেওয়া যায় না, বিষাক্ত সাপের দংশন ছাড়া এটি দেওয়া হলে রোগী মারাও যেতে পারে। কার্ডিয়াক সাপোর্ট সহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়।

 

তিনি আরও জানান, আমাদের কিছু অ্যান্টিভেনম থাকলেও তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে ১০ টির অর্ডার করা হয়েছে। শনিবার সেগুলো মেডিকেলে পৌঁছাবে। এস্টেট অফিস প্রধান মোহা. আলাউদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। পরিষ্কারের কাজ দ্রুত করার জন্য নতুন আরও কিছু মেশিন বৃদ্ধি করে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে এন্টিভেনম এবং এর এক্সপার্ট নিয়োগের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।

 

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন