কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট কি আমাদের মস্তিষ্ককে অলস করে দিচ্ছে? আমরা কি ধীরে ধীরে নিজেদের চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি? সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-এর একটি গবেষণা এই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি-র মতো এআই টুলের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা আমাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা (critical thinking), স্মৃতিশক্তি এবং সৃজনশীলতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলোকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিষয়টি অনেকটা জিপিএস (GPS) ব্যবহারের মতো। জিপিএস যেমন আমাদের পথ চেনার সহজাত ক্ষমতাকে কমিয়ে দিয়েছে, তেমনই এআই টুলগুলো আমাদের মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোকে দুর্বল করে দিতে পারে।
এমআইটি-র গবেষণা কী বলছে?
এমআইটি মিডিয়া ল্যাবের গবেষক নাটালিয়া কসমিনার নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের কয়েকটি দলে ভাগ করে প্রবন্ধ লিখতে দেওয়া হয়। একটি দলকে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়, একটি দলকে গুগল সার্চ এবং অন্য দলকে শুধুমাত্র নিজেদের জ্ঞান ব্যবহার করতে বলা হয়।
ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (EEG) ব্যবহার করে তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা আশ্চর্যজনক ফলাফল পান। দেখা যায়:
মস্তিষ্কের সংযোগ হ্রাস: যারা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছেন, তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ এবং সংযোগ সবচেয়ে কম ছিল। অর্থাৎ, তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয় ছিল।
স্মৃতিশক্তি দুর্বল: চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীরা তাদের লেখা প্রবন্ধের বিষয়বস্তু মনে করতে পারেননি। প্রায় ৮৩% ব্যবহারকারী তাদের লেখা থেকে সঠিক উদ্ধৃতি দিতে ব্যর্থ হন, যেখানে অন্য দলগুলোর ক্ষেত্রে এই হার ছিল মাত্র ১০%।
অলসতা বৃদ্ধি: গবেষকরা লক্ষ্য করেন, সময়ের সাথে সাথে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীরা আরও বেশি অলস হয়ে পড়ছিলেন এবং প্রায়শই কপি-পেস্ট করার প্রবণতা দেখাচ্ছিলেন।
তথ্যসূত্র আল জাজিরা।
ডিবিসি/এমইউএ