ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের বিপ্লবী নেত্রী ইলা মিত্রের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
ব্রিটিশ ভারতের বাংলা অঞ্চলে সংঘটিত অনেক আন্দোলনের সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ও অংশগ্রহণ ছিল। তবে নাচোল অঞ্চলের তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি বিখ্যাত।
১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা ইলা মিত্র ৭৭ বছর বয়সে ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর মারা যান। জন্মের সময় তার নাম রাখা হয় ইলা সেন। রমেন মিত্রের সঙ্গে বিয়ের পর স্বামীর পদবি নিয়ে তিনি ইলা মিত্র নামে পরিচিতি লাভ করেন।
কলকাতার বেথুন স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করেন ইলা। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ইলা মিত্র ছিলেন রাজ্য জুনিয়র অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়ন। এ ছাড়া ১৯৪০ সালে জাপানে অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত একমাত্র বাঙালি নারী অ্যাথলেট।
বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির গ্রামের নিরক্ষর নারীদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন তিনি। বিদ্যালয়ে তিন মাসের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৫০ জন। মূলত বিয়ের পর তেভাগা আন্দোলনের সঙ্গে ইলা মিত্র জড়িয়ে পড়েন স্বামীর অনুপ্রেরণায়। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল উৎপন্ন ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ নয়, এক ভাগ পাবেন জমিদার-জোতদারেরা, দুই ভাগ নেবেন কৃষকেরা।
ইলা মিত্র তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহী জেলার নবাবগঞ্জের নাচোল অঞ্চলের তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এই আন্দোলনের কারণে পুলিশের বর্বর নির্যাতনের শিকার হন তিনি। বন্দী অবস্থায় নির্মম অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েও সহযোদ্ধাদের বিষয়ে কোনো তথ্য পুলিশকে দেননি তিনি।
নাচোলের কৃষকদের আপনজন এই ইলা মিত্র শুধু নারী আন্দোলন নয়, প্রগতিশীল আন্দোলনেরও এক উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে পরিচিত।