আন্তর্জাতিক, অন্যান্য

কেনিয়ায় যাবজ্জীবন সাজা মাথায় নিয়ে জেলেই আইনজীবী হলেন তরুণী, লড়ছেন সহবন্দিদের জন্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

৬ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

জেলের চার দেয়ালের ভেতরেই বদলে গেছে এক নারীর জীবন। একসময় যিনি ছিলেন প্রেমিকের খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, আজ তিনি একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী আইনজীবী। কেনিয়ার ৩০ বছর বয়সী রুথ কামান্ডে কারাগারে বসেই লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (আইন) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি নাইরোবির ল্যাং'আটা ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি জেলের বন্দিদের আইনি সহায়তা দিচ্ছেন।

২০১৫ সালে নিজের প্রেমিক ফরিদ মোহাম্মদকে ২৫ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ ওঠে রুথের বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তবে ২০২৩ সালে কেনিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তার দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়।

 

বিচার চলাকালীন রুথ অনুভব করেন যে, আইনি জটিলতার কারণে তিনি এবং তার মতো অনেক বন্দি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই অসহায়ত্ব থেকেই আইন শেখার আগ্রহ জন্মায়। 'জাস্টিস ডিফেন্ডারস' নামক একটি সংস্থার সহায়তায় তিনি কারাগারে বসেই পড়াশোনা শুরু করেন এবং ২০২৪ সালে আইনের স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি তার ব্যাচের সেরা ছাত্রী (ভ্যালিডিক্টোরিয়ান) নির্বাচিত হন।

 

কারাগারে অনেক নারী বন্দি আছেন যারা দারিদ্র্যের কারণে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন না। রুথ এখন তাদের জন্যই কাজ করছেন। তিনি বন্দিদের মামলার জবানবন্দি বুঝতে, জেরার প্রশ্ন তৈরি করতে এবং জামিনের আবেদন লিখতে সহায়তা করেন।

 

রুথ বলেন, ‘আমি যখন প্রথম একজন নারীর জামিন এবং খালাসের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম, তখন থেকেই আমার উৎসাহ বেড়ে যায়। আমার মনে হয়েছিল, নিজের মামলা লড়তে না পারলেও অন্যদের বাঁচাতে পারছি।’ তার সহায়তায় বেশ কয়েকজন বন্দি আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে মুক্তি পেয়েছেন।

 

রুথ স্বীকার করেছেন যে তিনি অতীতে বড় ভুল করেছিলেন এবং অন্যের প্রাণ নেওয়া কখনোই উচিত নয়। তিনি নিহত ফরিদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং ২০২১ সালে ফরিদের মা তাকে ক্ষমা করে দেন।

 

বর্তমানে রুথ কেবল একজন আইনজীবীই নন, তিনি কেনিয়ার বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের জন্যও কাজ করছেন। তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ এবং প্যারোল বা শর্তসাপেক্ষে মুক্তির নিয়ম চালুর পক্ষে জোরালো দাবি জানাচ্ছেন। রুথের মতে, ‘কারাগারের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষকে সংশোধন করা, ধ্বংস করা নয়।’

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন