প্রস্তাবিত 'ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়' ধারণাটিকে 'অপরিকল্পিত ও অবিবেচনাপ্রসূত' আখ্যা দিয়ে এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের একদল শিক্ষার্থী। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তারা কলেজের আসন সংখ্যা বহাল রাখা, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং ইন্টারমিডিয়েট (উচ্চ মাধ্যমিক) স্তর যুক্ত না করাসহ তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবি মানা না হলে অতীতের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, অতীতে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিক দাবি মানতে সরকার অপারগতা প্রকাশ করলেও ছয় দফা দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তাদের অভিযোগ, "কলেজের কিছু বিশ্বাসঘাতক শিক্ষার্থী ও সংগঠনের" কারণে সেই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।
শিক্ষার্থীরা সরকারের নতুন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত কলেজের অধিভুক্তির মতোই আরেকটি "অপরিকল্পিত পদক্ষেপ" হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, সাত কলেজের সমস্যা সমাধান না করে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ছয়টি কলেজকে অনেকটা ঢাকা কলেজের অধিভুক্ত করা হয়েছে এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা শিক্ষার মানের সঙ্গে প্রহসন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি:
১. আসন সংখ্যা কমানো যাবে না: দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি তিতুমীর কলেজ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার অন্যতম ভরসাস্থল। এখান থেকে আসন কমানো হলে বহু শিক্ষার্থীর স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হবে।
২. শিক্ষার মান উন্নয়ন: শিক্ষার মান বাড়াতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি, আইন, সাংবাদিকতা ও ট্যুরিজমের মতো আধুনিক বিভাগ চালু, কলেজের পাশে অব্যবহৃত রাজউকের জমিতে নতুন হল নির্মাণ করে আবাসন সংকট দূর করা, সেমিস্টার পদ্ধতি চালু এবং লাইব্রেরি আধুনিকায়ন করতে হবে।
৩. ইন্টারমিডিয়েট যুক্ত করা যাবে না: কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সের সঙ্গে ইন্টারমিডিয়েট স্তর যুক্ত করা হলে নতুন সংকট তৈরি হবে, যা শিক্ষার্থীরা যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে বলে জানায়।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, একটি ষড়যন্ত্রকারী চক্র তাদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে যে তারা কলেজকে আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফিরিয়ে নিতে বা ডিগ্রি কোর্স চালু করতে চাইছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমাদের দাবিগুলো উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে কোনো নতুন ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে, তার বিপরীতে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
ডিবিসি/এএমটি