দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন সাবেক জেলা দায়রা জজ ও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন (চুপ্পু)।
মো. সাহাবুদ্দিন ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয়কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে সেই হামলার ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গত বছর তাকে আওয়ামী লীগের প্রচার এবং প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে দলের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করে এ কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এর আগে, সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনের সামনে এসে ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ অপেক্ষা করতে থাকেন। এর ১০ মিনিট পর মো. সাহাবুদ্দিন কমিশনে এলে তাকেসহ প্রতিনিধিদল ভেতরে ঢোকেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের নাম প্রস্তাব করেছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তাকে সমর্থন দিয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মো. সাহাবুদ্দিন মাঠেরই রাজনীতিক। তিনি ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসরের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেই সক্রিয় আছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় তাকে গ্রেপ্তারও হতে হয়েছিল।‘
মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
উল্লেখ্য, ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই এবং প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি। সংসদ ভবনে ভোট গ্রহণ হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। অবশ্য রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। সে ক্ষেত্রে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিনেই একক প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
সংবিধান অনুয়াযী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।