লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য

কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়

ডেস্ক প্রতিবেদন

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কোলেস্টেরল হল নীরব ঘাতক। আমাদের শরীরের একটি চর্বিযুক্ত পদার্থে যা কোষ তৈরি করতে এবং শারীরিক কার্যকারিতা বাড়াতে খুব বেশি পরিমাণে প্রয়োজন এটি। যখন কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন এটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায়, রক্ত প্রবাহকে বাঁধা দেয় এবং হার্টের ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আপনার দৈনন্দিন ডায়েট ভালো স্বাস্থ্যের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমরা নিয়মিত যা খাই তা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নির্ধারণ করে। তবে, খাবারও হতে পারে আপনার সমস্যার সমাধান।

শরীরে এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) এর মাত্রা কমাতে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো ক্যালোরি গ্রহণ সীমিত করা এবং কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। কিছু খাবার ও পানীয় সম্পর্কে জেনে নিন যেগুলো খাদ্যতালিকায় রাখলে তা আপনাকে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

রসুন : রান্নাঘরেই পাবেন রসুন। স্বাস্থ্যকর রসুনের গুণাগুণ অনেকের জানা। রসুনে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ ও অর্গানোসালফার যৌগ। এই যৌগ ঔষধি গুণ হিসেবে কাজ করে। বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে বাজে কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর রসুন।

গ্রিন টি : গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে আছে পলিফেনল। এটি শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি আমাদের শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। এটি আমাদের শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ব্ল্যাক টি : সেলুলার ফিজিওলজি অ্যান্ড বায়োকেমিস্ট্রি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ব্ল্যাক টিতে ক্যাটিচিন নামক কিছু যৌগ রয়েছে। যা আয়ন চ্যানেল প্রোটিন সক্রিয় করার মাধ্যমে রক্তনালীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। যে কারণে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

বিটরুটের জুস : শীতে তাজা বিটরুটের জুস পান করা উচিত। হিলিং ফুডস নামক বইয়ের অনুসারে এটি রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পাশাপাশি বিটরুটে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন-বি স্নায়ুর কার্যকারিতা উন্নত করতেও সাহায্য করে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, বিটরুটে নাইট্রেটের উচ্চ উপাদান নাইট্রিক অক্সাইড নামক একটি গ্যাস তৈরি করে, যা রক্তনালীকে শিথিল এবং প্রসারিত করতে সাহায্য করে। ফলে রক্ত ​​প্রবাহের উন্নতি হয়।

ধনে : আমাদের দেহে এলডিএল নামক একধরনের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে, যা দেহের শিরা-উপশিরার দেয়ালে জমে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলে সমস্যা বাড়ায়। এর কারণে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ধনে এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। আবার দেহের জন্য ভালো বা উপকারী একধরনের কোলেস্টেরল, এইচডিএলর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে এই ধনে।

মেথি : মেথিকে মসলা, খাবার, পথ্য—তিনটিই বলা চলে। এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি ও তারুণ্য ধরে রাখার বিস্ময়কর এক ক্ষমতা। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ-জীবাণু মরে। রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। ডায়াবেটিসের রোগী থেকে শুরু করে হৃদরোগের রোগী পর্যন্ত সবাইকে তাদের খাবারে মেথি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কমলার জুস : আমরা কমবেশি সবাই সকালের নাস্তায় তাজা কমলার রস পছন্দ করি। এটি কেবল সতেজই নয়, সেইসঙ্গে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-িঅক্সিডেন্টও দেয়। ডিকে পাবলিশিং-এর হিলিং ফুডস বই অনুসারে, কমলা এবং অন্যান্য সাইট্রাস ফলে হেস্পেরিডিন থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে পেকটিন (ফাইবার) এবং লিমোনয়েড যৌগও কমাতে পারে।

ওটস : কোলেস্টেরল কমানোর সবচেয়ে সোজা উপায় হলো, নিয়মিত এক বাটি ওটস্ খাওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরকে সুস্থ রাখতে দিনে ৫-১০ গ্রাম দ্রবণীয় ফাইবার দরকার। এক বাটি ওটসে রয়েছে ১-২ গ্রাম দ্রবণীয় ফাইবার। ওটসের সাথে অন্যান্য ফল, যেমন কলা, আঙুর ইত্যাদি মিশিয়ে খেলে আরও ভালো।

আরও পড়ুন