জেলার সংবাদ

ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করে কর্মসংস্থান হাজারো মানুষের

কে. এম. হাবিবুর রহমান, পিরোজপুর প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১২:৪৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মালয়েশিয়াতে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জেতার পর দেশের মধ্যে বেড়ে যায় ক্রিকেট ব্যাটের চাহিদা। ফলে আরও কর্মসংস্থান তৈরি হয় ক্রিকেট ব্যাট তৈরি পেশায়।

বিশ্বে ক্রিকেটপ্রেমী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। শুধু দর্শক হিসেবে নয়, ভালো মানের ক্রিকেট খেলে বিশ্বের বুকে জায়গা করে নিয়েছে ক্ষুদ্র মানচিত্রের দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি। আর ক্রিকেট খেলার অন্যতম প্রধান উপকরণ ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের।

যুগ যুগ ধরে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার মানুষ কাঠ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কাঠ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের ফার্নিচার তৈরির সুনাম তাদের দেশব্যাপী। এ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের উড়িবুনিয়া গ্রামের একজন কাঠমিস্ত্রি আব্দুল লতিফ বেপারী, যিনি ২০১২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯০ সালের কিছু আগে আব্দুল লতিফ ঢাকায় কাজ করার সময় ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাজ শেখেন। এর দুই বছর পর গ্রামের বাড়িতে ফিরে নিজেই ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তার শ্রমিকরাই বিভিন্ন গ্রামে গড়ে তোলেন ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা।

বর্তমানে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের উড়িবুনিয়া, বিন্না, খেজুরবাড়ী, জিলবাড়ী এবং কাটাখালি গ্রামে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা। আর সেখানে শিশু ও কিশোরদের জন্য সেখানে তৈরি হয় ৯টি আকারের ক্রিকেট ব্যাট। যেগুলোর প্রতিটি ২৫-৩০০ টাকা দরে পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি হয়। এসব কারখানায় কাজ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে দুই সহস্রাধিক নারী-পুরুষের। স্বল্প মূল্যের কদম এবং আমড়া কাঠ থেকে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির মূল কাজটি পুরুষেরা করলেও, রং করা এবং স্টিকার লাগানোসহ কম পরিশ্রমের অন্যান্য কাজগুলো নারীরাই করেন।

বিগত দিনে সুন্দরবন থেকে গেওয়া কাঠ সংগ্রহ করে সেগুলো দিয়েই ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করা হতো। সরকার গেওয়া কাঠের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর নিম্নমানের কাঠ দিয়ে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি হচ্ছে। তাই সরকারের কাছে সংশ্লিষ্টদের দাবি তাদের জন্য মানসম্মত কাঠের ব্যবস্থা করা।

বাংলা অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী ৬-৭ মাস চলে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাজ। আর কারখানার আকার ভেদে একটি কারখানায় ১০ হাজার থেকে এক লক্ষ ব্যাট তৈরি হয়, যা থেকে বছরে ১০ কোটি টাকারও বেশি উপার্জন হয়। ক্রিকেট ব্যাট তৈরির সাথে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন সরকারের সার্বিক সহযোগীতা পেলে নেছারাবাদেই তৈরি হতে পারে রপ্তানী উপযোগী মানসম্মত ক্রিকেট ব্যাট।

আরও পড়ুন