বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাবারটুকুও পাচ্ছে না গাজার বাসিন্দারা। যে সামান্য পরিমাণ ত্রাণ সেখানে ঢুকছে তা সকলের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আল-আথামনা নামে গাজার এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ক্ষুধার যন্ত্রণায় বহু মানুষ রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছেন।
এক সময় বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য গাজায় গাড়ি চালাতেন আথামনা। ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের আর গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না, ফলে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজ নেই তার। তিনি জানিয়েছেন, সারা দিন ধরে কোথাও না কোথাও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হয় শেলিং হচ্ছে, অথবা বিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। মানুষ এক জায়গায় নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিতে পারছেন না। সারাক্ষণ প্রাণের ভয়। তার ওপর খাবার নেই। বহু মানুষ রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছেন।
আথামনার কথায়, “আমি নিজে দেখেছি, কীভাবে মানুষ রাস্তার ওপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছে।”
গত মে মাসে শেষবার আথামনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল ডিডাব্লিউয়ের। সে সময় তিন মাসের ব্লকেড শেষ করে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে দিয়েছিল। গাজার ২০ লাখ মানুষ এর ফলে বেঁচে যাবেন বলে সে সময় মনে হয়েছিল আথামনার। কিন্তু মাসদুয়েক পর সেই অভিমত বদলে গেছে তার।
তিনি জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি সত্যিই শোচনীয়। এক টুকরো রুটির জন্যও লড়াই করতে হচ্ছে। আমি আমার নাতি-নাতনিদের নিয়ে থাকছি। তারা সারাক্ষণ কাঁদছে খিদের জ্বালায়। কীভাবে ওদের মুখে একটু খাবার তুলে দেবো, সেই চিন্তাতেই দিন কাটছে।”
ইসরায়েলি অবরোধের মুখে গাজায় খাদ্য সংকট ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ অবস্থায় খাবারের সন্ধানে ছোটাছুটি করতে দেখা যাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের। সেই খাবার নিতে গিয়ে গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত, দুই মাসে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অন্তত এক হাজার ৫৪ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এর আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় অনাহার ছড়িয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে ১০০টিরও বেশি সাহায্য সংস্থা। তারা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজার ভেতরে খাদ্য বিতরণ করতে দিচ্ছে না।
ডিবিসি/এমএআর