বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

খেলতে গিয়ে ঘরের সীমানায় বল লাগায় দুই শিশুকে গাছে বাঁধলেন শিক্ষকের স্ত্রী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ২রা আগস্ট ২০২৫ ০৩:৪৫:৪৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ফুটবল খেলার সময় বল সীমানা প্রাচীরে লাগায় দুই স্কুলছাত্রকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার এক স্কুল শিক্ষকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সোমবারের এই ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লক্ষীদ্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী চয়ন চন্দ্র রায় এবং বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মাসুম বিল্লাহসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলের দুপুরের বিরতিতে মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলার এক পর্যায়ে বলটি স্থানীয় বাসিন্দা ও কালমঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কালিদাস চন্দ্র রায়ের বাড়ির টিনের বেড়ায় লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রী ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চয়ন ও মাসুমকে ধরে নিয়ে যান এবং বাড়ির ভেতর একটি পেয়ারা গাছের সঙ্গে গরুর দড়ি দিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখেন।

 

অন্যান্য শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ছাড়িয়ে আনতে গেলেও অভিযুক্ত নারী তাতে রাজি হননি এবং অভিভাবকদের আসতে বলেন। পরে পরিবারের সদস্যরা ও শিক্ষকরা মিলে তাদের উদ্ধার করে।

 

ঘটনা জানাজানি হলে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকে অভিযুক্ত নারী জনসম্মুখে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও স্থানীয়দের একাংশ তা মেনে নেয়নি। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিক্ষুব্ধ জনতা ওই শিক্ষকের বাড়ির টিনের বেড়া ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে বৈঠকটি অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।

 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী চয়ন জানায়, ফুটবল খেলার সময় বল বেড়ায় লাগলে শিক্ষকের স্ত্রী তাদের ধরে নিয়ে বেঁধে রাখেন।

 

অভিযুক্ত নারীর স্বামী শিক্ষক কালিদাস চন্দ্র রায় দাবি করেন, তার স্ত্রী সেদিন জ্বরে অসুস্থ ছিলেন। শিক্ষার্থীরা বাড়ির সীমানায় বারবার বল মারছিল এবং ঘরের চালে ঢিল ছুড়ছিল। বেশ কয়েকবার নিষেধ করার পরও তারা দুষ্টুমি থামায়নি। তাই তাদের ভয় দেখানোর জন্যই তার স্ত্রী এমনটি করেছেন এবং পরে ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।

 

আটোয়ারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং থানা পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় তারা চলে আসেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে।

ডিবিসি/এমএআর

আরও পড়ুন