দক্ষিণ ফ্রান্সে গত মঙ্গলবার থেকে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানল ১৬,০০০ হেক্টরেরও বেশি বনভূমি ও গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ই আগস্ট) আগুনের ছড়িয়ে পড়ার গতি কিছুটা কমলেও এটি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ফ্রান্সের প্রায় আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই দাবানলে ইতিমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, তিনি সরে যাওয়ার নির্দেশ অমান্য করেছিলেন। আগুন কয়েক ডজন বাড়িঘর ধ্বংস করেছে এবং প্রায় ২ হাজার বাসিন্দা ও পর্যটককে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।
আগুনে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেন্ট-লরেন্ট-দে-লা-ক্যাব্রেরিস গ্রামের কৃষক অ্যালাইন রেনো বলেন, "আমাদের কাছে এখন পানি, ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ কিছুই নেই। সব শেষ। এটা যেন মহাপ্রলয়।" তিনি আরও বলেন, "আমরা আমাদের বাড়িটি বাঁচাতে পেরেছি, কিন্তু এর জন্য টানা দুই দিন, সারারাত ধরে লড়তে হয়েছে।"
অড অঞ্চলের বনভূমির ওপর দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, প্যারিস শহরের দেড়গুণ আকারের বেশি এলাকা আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। স্পেন সীমান্ত ও ভূমধ্যসাগরের কাছাকাছি এই আগুন প্রবল বাতাস এবং কয়েক মাসের খরাপীড়িত শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে।
অঞ্চলের ডেপুটি প্রিফেক্ট রেমি রেসিও সাংবাদিকদের বলেন, "আগুনের ছড়িয়ে পড়ার গতি কমছে, কিন্তু এটি এখনও সক্রিয়।" তিনি আরও জানান, আবহাওয়ার পরিস্থিতি, বিশেষ করে বাতাসের দিক পরিবর্তনের কারণে আগুনের তীব্রতা বুধবারের তুলনায় অনেকটাই কমেছে।
প্রায় ২,০০০ দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এবং নতুন করে যেন আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। বুধবার রাতে রেকর্ড করা ১৬,০০০ হেক্টরের পর বৃহস্পতিবার পুড়ে যাওয়া এলাকার পরিমাণ বেড়ে প্রায় ১৭,০০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। প্রিফেক্ট ক্রিশ্চিয়ান পোজেট বলেন, "যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি, আগুন যেকোনো মুহূর্তে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারে।"
সূত্র: রয়টার্স
ডিবিসি/এমএআর