বরিশালের হিজলা উপজেলায় সৎ মায়ের মায়ের ঢেলে দেওয়া গরম পানিতে ঝলসে প্রতিবন্ধী ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় পলাতক রয়েছেন সৎ মা ফাহিমা।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাইদুলের মৃত্যু হয়। সে মেমানিয়া ইউনিয়নের বাউশিয়া গ্রামের জেলে নুরু মীরার ছেলে।
সাইদুলের ভাই জেলে সিদ্দিক মীরা বলেন, প্রতিদিনের মতো আমি আর বাবা নদীতে মাছ ধরতে যাই। আমার ভাই জন্মের পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী। সে চলাফেরা করতে পারে না। সবসময় শুয়ে থাকতো। গত রবিবার কোন এক সময় সৎ মা ফাহিমা আমার ভাইয়ের শরীরে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেয়।
সোমবার ঘরে ফেরার পর বিষয়টি জানতে পারি। সাইদুলের ঘরে গিয়ে দেখতে পাই তার শরীর ঝলসে গেছে। কোন চিকিৎসা না দেওয়ায় আরো খারাপ অবস্থা হয়েছে। ওইদিন রাতেই আমরা তাকে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখান থেকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আজ সকালে ভাইকে নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়
জানা যায়, নিহত সাইদুলের প্রকৃত মা একবছর আগে মারা যান। ছয় মাস পূর্বে তার বাবা আবার বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই সৎ মা কোনভাবেই সাইদুলকে মানতে পারছিল না। কারণে-অকারণে গালাগালসহ বিভিন্ন ধরনের কটাক্ষ করতেন। বাবা নিষেধ করলেও শুনতেন না।
প্রতিবেশি ইউনুস সরদার বলেন, সাইদুলের পেট থেকে পিছনের অংশ ঝলসে খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। সোমবার বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রামবাসী তাকে দেখতে বাসায় যায়। গিয়ে শুনতে পান সাইদুল পান খেতে চাওয়ায় সৎ মা ক্ষুব্ধ হয়ে তার গায়ে গরম পানি ঢেলে দেন। এতে তার পেট ও পিঠের অংশ ঝলসে ক্ষতস্থান ফুলে পেকে ওঠে।
হিজলা হাসপাতালের চিকিৎসক মাজাহারুল ইসলাম কাওসার জানিয়েছেন, সাইদুলের শরীরের ৩০ ভাগ ঝলসে গেছে। সাথে সাথে চিকিৎসা না দেওয়ায় ওই সকল জায়গায় পচন ধরেছে। এ কারণে বরিশাল প্রেরণ করা হয়।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) ইউনুস মিঞা বলেন, সাইদুলের শরীর কিসের আঘাত তা চিকিৎসক বলতে পারবেন। আপাতত অপমৃত্যুর মামলা করে ময়না তদন্ত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। গরম পানি ছুঁড়ে মারায় তার মৃত্যু হলে অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।