ইসরায়েলি অবরোধের ফলে সৃষ্ট তীব্র খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষে অনাহারে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে ভয়াবহ এই মানবিক সংকটে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ২০০-তে পৌঁছেছে, যার মধ্যে ৯৬ জনই শিশু। এই মর্মান্তিক পরিসংখ্যানের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) হাজার হাজার শিশুর তীব্র অপুষ্টিতে ভোগার বিষয়ে সতর্ক করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এসকল তথ্য জানা যায়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, বৃহস্পতিবার (৭ই আগস্ট) ‘দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির’ কারণে মোট চারজনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে, যাদের মধ্যে এই দুই শিশুও রয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ১৯৭-এ দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র জুলাই মাসেই গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২,০০০ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ মাসিক সংখ্যা।
গাজা শহরের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘দুঃস্বপ্নের মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন আল জাজিরার সাংবাদিক ইব্রাহিম আল-খালিলি। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বিমান থেকে ফেলা সামান্য সাহায্যের জন্য শত শত ক্ষুধার্ত মানুষ পাগলের মতো ছুটছে। তিনি বলেন, ‘এখানে লড়াইটা খাবারের জন্য নয়, বরং স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য।’
বিপজ্জনক এই বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মুস্তাফা তানানি আল জাজিরাকে বলেন, কিছু খাবারের প্যাকেট বিমান থেকে ফেলার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর উপরে এমনভাবে আটকে গেছে যে সেগুলো উদ্ধার করা ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’। তিনি হতাশ হয়ে বলেন, ‘এখানে রীতিমতো যুদ্ধ চলে। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে আসি কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই পাই না। বিমানগুলো অযথাই সাহায্য ফেলছে। দেখুন তারা কোথায় ফেলেছে, ভবনগুলোর উপরে। এটা আমাদের জন্য বিপজ্জনক।’
ডিবিসি/এনএসএফ