আন্তর্জাতিক, এশিয়া

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন: নিহত শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২০শে আগস্ট ২০২৫ ০৭:৪৬:৫১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৬২,০০০ ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৮৮৫ জনই শিশু। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি হামলা তীব্রতর হওয়ায় এই মর্মান্তিক সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (UNRWA) মঙ্গলবার জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার কোনো স্থানই এখন আর শিশুদের জন্য নিরাপদ নয়। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশ করতে না পারায় সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

 

UNRWA আরও জানায়, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী জাতিসংঘের পতাকা থাকা সত্ত্বেও সেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে, যা বহু শিশুর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্থাটি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘গাজায় শিশুদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই।’

 

জাতিসংঘের শিশু তহবিল, ইউনিসেফ-এর তথ্য উদ্ধৃত করে UNRWA উল্লেখ করেছে যে, গত পাঁচ মাসে প্রতি মাসে গড়ে ৫৪০ জনেরও বেশি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি আল জাজিরার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১২ বছর বয়সী আমনা আল-মুফতি তার পরিবারের জন্য পানি আনতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়, যা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

 

এদিকে, মঙ্গলবার (১৯শে আগস্ট) ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া অন্তত আটজন ত্রাণপ্রার্থী ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। মে মাসের শেষ থেকে ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর এ ধরনের হামলায় প্রায় ২,০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

 

খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত আটজন এবং দেইর এল-বালাহ-তে একটি তাঁবুতে হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

 

আন্তর্জাতিক সতর্কতা উপেক্ষা করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতেও তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে। গাজা সিটির জাইতুন এলাকায় বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নির্বিচারে বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং জাইতুন এলাকায় ৪৫০টিরও বেশি আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে।

 

অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার নিশ্চিত করেছে যে, হামাস ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের একটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা হামাসের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করছেন। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটির কট্টর-ডানপন্থী সরকার গাজায় আটক সকল বন্দিকে একবারে ফেরত চায়।

 

সূত্র: আল জাজিরা

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন