আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিশেষ করে উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামলা তীব্র করা হয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র গাজা সিটিতেই ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটি দখলের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই হামলা জোরদার করেছে। সংবাদমাধ্যমটি এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছে, যেখানে সোহা তাফেশ নামের এক ফিলিস্তিনি নারী তার নাতনি সারাহ আবু দাফের মরদেহ কোলে নিয়ে কবরস্থানের দিকে যাচ্ছিলেন। ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুটি নিহত হয়।
হামলার শিকার হচ্ছেন ক্ষুধার্ত ও সাহায্যের জন্য অপেক্ষারত সাধারণ মানুষও। উত্তরাঞ্চলে সাহায্য বিতরণের সময় বিমান হামলায় ১২ জন এবং খাবারের জন্য অপেক্ষারত আরও ৩৭ জনকে ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতেও বাড়ছে মৃত্যু। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩টি শিশুসহ ৮ জন অনাহারে মারা গেছেন। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মোট মৃতের সংখ্যা ২৩৫-এ দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৬ জনই শিশু।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা UNRWA-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এই পরিস্থিতিকে ‘শিশুদের ওপর যুদ্ধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি শিশু নিহত বা আহত হয়েছে এবং প্রায় ১৭ হাজার শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এর পাশাপাশি, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'মেডিসাইড' বা স্বাস্থ্যব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার অভিযোগ তুলেছেন, যাকে তারা গণহত্যার একটি ভয়ংকর উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সামগ্রিকভাবে, আল জাজিরার প্রতিবেদনটি গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে।
ডিবিসি/এনএসএফ