গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-কে ইসরায়েলের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইতালি জুড়ে আয়োজিত সাধারণ ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে গোটা দেশ।
শুক্রবারের (৩রা অক্টোবর) এই বিক্ষোভে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। শনিবাররোমে আরও বড় সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকারের উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ইতালির বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়নগুলোর একটি, সিজিআইএল (ইতালীয় সাধারণ শ্রম কনফেডারেশন), সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (X) জানিয়েছে যে, এই ধর্মঘটটি মূলত ত্রাণবাহী জাহাজের প্রতি সমর্থন এবং গণহত্যা বন্ধ করার দাবিতে ডাকা হয়েছিল। এই জাহাজে প্রায় ৪০ জন ইতালীয় নাগরিক ছিলেন।
তুরিন-ভিত্তিক সংবাদপত্র 'লা স্ট্যাম্পা'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধর্মঘটের কারণে দেশের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতই স্থবির হয়ে পড়ে। রেল, বিমান, মেট্রো এবং বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এর প্রভাব পড়ে। বিক্ষোভকারীরা পিসা, পেসকারা, বোলোগনা এবং মিলানের কাছে মহাসড়ক অবরোধ করে এবং লিভোর্নো বন্দরের প্রবেশপথও বন্ধ করে দেয়।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শুধুমাত্র মিলানেই ৮০,০০০-এর বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়। শহরের রাস্তায় ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে বিশাল জনসমুদ্র দেখা যায়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো, যুদ্ধযন্ত্র থামাও লেখা ব্যানার বহন করছিল।
সিজিআইএল নেতা মৌরিজিও লান্দিনি বলেন, 'এটি কেবল একটি সাধারণ ধর্মঘট নয়। আমরা আজ এখানে মানুষের মধ্যে, বিভিন্ন জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব রক্ষা করতে এসেছি, মানবতাকে কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনতে, গণহত্যা এবং পুনঃস্ত্রীকরণের নীতিকে 'না' বলতে এসেছি।'
আল জাজিরার রোম থেকে করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী এই বিক্ষোভে ছাত্র, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং এমনকি ছোট শিশুদের নিয়ে অনেক পরিবারসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে।
এদিকে, আজ শনিবার রোমে একটি বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুক্রবার রোমের বিক্ষোভে প্রায় ৩ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিল বলে সিজিআইএল জানিয়েছে। আজকের সমাবেশটি স্থানীয় সময় দুপুর ২:৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:৩০) পিয়াজালে অস্তিয়েন্স থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ডিবিসি/এমইউএ