গাজায় ক্রমবর্ধমান ক্ষুধা এবং মানবিক সংকট নিয়ে তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ভূখণ্ডের তিনটি জনবহুল এলাকায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার জন্য সীমিত পরিসরে যুদ্ধবিরতি শুরু করেছে। ২১ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে মানবিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
রবিবার (২৭শে জুলাই) সামরিক বাহিনীর বিবৃতির বরাতে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, গাজা সিটি, দির আল-বালাহ এবং মুওয়াসি—এই তিনটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্থানীয় সময় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই বিরতি কার্যকর থাকবে। এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এর পাশাপাশি, ত্রাণ বিতরণের জন্য সুরক্ষিত রাস্তা তৈরি করা হবে এবং বিমান থেকে আটা, চিনি ও টিনজাত খাবারসহ বিভিন্ন সাহায্য সামগ্রী ফেলা হয়েছে বলেও সেনাবাহিনী উল্লেখ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা কয়েক মাস ধরেই গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। ইসরায়েল যুদ্ধজুড়ে ত্রাণ সরবরাহে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে রেখেছে। তাদের অভিযোগ, হামাস এই ত্রাণসামগ্রী নিজেদের শাসন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করে, যদিও এই দাবির সপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজা থেকে শীর্ণকায় শিশুদের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলোসহ বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে এবং যুদ্ধ বন্ধ করে মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে ইসরায়েল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই বিরতি চলাকালীন গাজার অন্যান্য অংশে হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এই বিরতি শুরুর ঠিক আগে, গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন পৃথক হামলায় অন্তত ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এই আংশিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বৃহত্তর যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার পথে। শুক্রবার ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে দোষারোপ করে তাদের আলোচক দলকে ফিরিয়ে আনে এবং জানায় যে তারা জঙ্গি গোষ্ঠীটির সাথে আলোচনার "বিকল্প পথ" বিবেচনা করছে। ইসরায়েল বলেছে, হামাস আত্মসমর্পণ করলে, নিরস্ত্র হলে এবং নির্বাসনে গেলে তারা যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত, কিন্তু হামাস এই শর্ত মানতে অস্বীকার করেছে।
সূত্র: এপি
ডিবিসি/এমএআর