আন্তর্জাতিক, এশিয়া

গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের' অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ২রা আগস্ট ২০২৫ ০৮:৩৯:১১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি এবং ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে ইসরায়েল 'পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা ও হত্যাকাণ্ড' চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এর গাজা প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ক্যারোলিন উইলেমেন এই কঠোর সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। আলজাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসকল তথ্য জানা যায়।

শুক্রবার (১লা আগস্ট) আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইলেমেন বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সামান্য কিছু ত্রাণ প্রবেশ করলেও উপত্যকায় খাদ্য সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, 'ধারাবাহিকভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে, প্রতিদিন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে ঘুরছে।'

 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি এবং অনাহারে আরও তিনজন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এর ফলে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬২ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৯২টি শিশু।

চিকিৎসকদের সূত্রমতে, শুক্রবার উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৯ জন নিহত এবং ২৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহের চেষ্টার সময়।

 

গাজায় ইসরায়েলের সৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। মঙ্গলবার (২৯শে জুলাই) একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সতর্ক করে বলেছে যে গাজায় 'দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি' সৃষ্টি হতে চলেছে।

 

যদিও ইসরায়েল সম্প্রতি আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলার (এয়ারড্রপ) অনুমতি দিয়েছে, জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা এই উদ্যোগকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল, বিপজ্জনক এবং অকার্যকর বলে নিন্দা জানিয়েছেন। তারা স্থল সীমান্ত দিয়ে নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (UNRWA) এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, 'যদি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং অদক্ষ এয়ারড্রপের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে, তবে স্থলপথের ক্রসিংগুলো খোলার জন্যও একই রকম সদিচ্ছা থাকা উচিত। গাজার মানুষ যখন অনাহারে মারা যাচ্ছে, তখন দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো গাজাকে সাহায্য দিয়ে প্লাবিত করা।'

 

গাজার দেইর এল বালাহ থেকে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক দপ্তর (OCHA) এর কর্মকর্তা ওলগা চেরেভকো আল জাজিরাকে বলেন, সামান্য পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা বাড়লেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। তিনি বলেন, ‘যেটুকু আসছে তা সাগরের বুকে এক ফোঁটা জলের মতো। এখানকার চাহিদা অনেক।’

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন