গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১০ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রকে বস্তায় ভরে খোলা ছাদে তীব্র রোদের মধ্যে ফেলে রেখে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৮শে জুন) কালীগঞ্জের ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে, যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির নাম আবু বকর সিদ্দিকী। সে ফুলদী দাওদাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে এবং ওই মাদ্রাসারই একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষক মুফতি জাকারিয়া পার্শ্ববর্তী মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
ভুক্তভোগী শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া শিশু আবু বকরকে একটি চটের বস্তায় ভরে মাদ্রাসার রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখেন। এরপর মাদ্রাসার মূল ফটকে তালা দিয়ে তিনি বাইরে চলে যান। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তীব্র রোদের তাপে বস্তার ভেতরেই শিশুটি প্রস্রাব ও পায়খানা করে ফেলে। তার এক সহপাঠী বিষয়টি টের পেয়ে মাদ্রাসা থেকে গোপনে জানালা দিয়ে পালিয়ে গিয়ে আবু বকরের পরিবারকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসায় ছুটে এসে মূল ফটক তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয় এবং কালীগঞ্জ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ছাদে থাকা বস্তাবন্দী শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলাউদ্দিন জানান, শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে এবং এই অমানবিক ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
ডিবিসি/এএমটি