কিছু কণ্ঠস্বর থাকে যা সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বেঁচে থাকে। ঠিক তেমনই এক অবিস্মরণীয় কণ্ঠের জাদুকর কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ, যিনি কেকে নামেই কোটি ভক্তের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন।
আজ, ২৩শে আগস্ট, এই কিংবদন্তী গায়কের ৫৭তম জন্মবার্ষিকী। তিনি সশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলেও, তাঁর গান আজও বন্ধুত্ব, ভালোবাসা আর স্মৃতির প্রতিশব্দ হয়ে বেঁচে আছে।
১৯৯৯ সালে ‘পল’অ্যালবামের মাধ্যমে কেকে-র উত্থান ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা। অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক ‘পল’ এবং ‘ইয়ারোঁ’ গান দুটি শুধু হিট হয়নি, বরং ভারতের তরুণ প্রজন্মের কাছে বন্ধুত্ব ও বিদায়ের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত হয়েছিল। কলেজের করিডোর থেকে শুরু করে স্কুল জীবনের শেষ দিন-কেকে-র কণ্ঠ ছাড়া যেন কোনো স্মৃতিই পূর্ণতা পেত না।
এরপর বলিউডের প্লেব্যাকে শুরু হয় তাঁর অপ্রতিরোধ্য যাত্রা। ‘তড়প তড়প কে’-এর মতো হৃদয় বিদারক গান থেকে শুরু করে ‘আঁখোঁ মে তেরি’-এর মতো রোমান্টিক সুর, কিংবা ‘দস বাহানে’-এর মতো ডান্স নম্বর-কেকে তাঁর বহুমুখী প্রতিভা দিয়ে সব ধরনের গানে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তিনি কখনো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গান না শিখলেও, তাঁর কণ্ঠে যে আবেগ এবং সততা ছিল, তা-ই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল।
খ্যাতির শীর্ষে থেকেও কেকে ছিলেন প্রচারবিমুখ, একজন নিপাট ভদ্রলোক এবং পুরোদস্তুর পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ। তাঁর জীবন জুড়ে কোনো বিতর্ক ছিল না, ছিল শুধু গান আর পরিবার। তাই হয়তো তাঁকে ভক্তদের আরও কাছে নিয়ে গিয়েছিল।
২০২২ সালের ৩১শে মে, কলকাতায় একটি লাইভ কনসার্টের পর তাঁর আকস্মিক প্রয়াণ সঙ্গীত জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যা ভালোবেসে গেছেন, সেই গানের মঞ্চেই কাটিয়েছেন। কেকে চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন তাঁর অমূল্য সৃষ্টি।
ডিবিসি/এমইউএ