জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গোপালগঞ্জ। আজ বুধবার দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এনসিপির অভিযোগ, তাদের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে ও গাড়িবহরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথেও হামলাকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কর্মসূচি শুরুর আগেই শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা মঞ্চ, চেয়ার ও সাউন্ড সিস্টেম ভাঙচুর করে এবং ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। এনসিপির নেতারা এই হামলার জন্য ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন।
এর আগে সকালে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
বিকেলে সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে পুনরায় হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে হামলাকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। হামলাকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে বলে জানা গেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, এই সহিংস ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। ‘গোপালগঞ্জে কী হচ্ছে?’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, "গোপালগঞ্জ তো বাংলাদেশেরই অংশ। যতদূর জানতে পেরেছি, এনসিপির নেতৃবৃন্দ স্বাভাবিক নিয়মে সর্বপর্যায়ের প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ব থেকেই আলাপ-আলোচনা করে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়েছেন। এটি তাদের রাজনৈতিক অধিকার।"
তিনি আরও বলেন, "এখন যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, কার্যত মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো উপস্থিতিই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অতি দ্রুত সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ইতিহাসের পূর্ণ দায় সরকারের ওপরেই বর্তাবে।"
ডা. শফিকুর রহমান সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে সকল ধরনের উশৃঙ্খলতা থেকে বিরত থাকার এবং শান্তিপ্রিয় ও ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ডিবিসি/জেআরওয়াই