ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দুই সেনাসদস্য নেদারল্যান্ডস ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ওই দুই সেনা গাজা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে উদ্বেগের কারণে তারা ইউরোপের এই দেশটির রাজধানী আমস্টারডাম থেকে পালিয়ে যান।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। মূলত ফিলিস্তিনপন্থি একটি গ্রুপ তাদের শনাক্ত করার পরই তারা আমস্টারডাম থেকে পালিয়ে ইসরায়েলে চলে যান।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ফিলিস্তিনিপন্থি একটি সংগঠন তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্র্যাক করছে জানতে পারার পর গাজায় লড়াই করা দুই ইসরায়েলি সৈন্য আমস্টারডাম থেকে পালিয়ে ইসরায়েলে ফিরে গেছেন বলে মঙ্গলবার ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার কান জানিয়েছে।
ইসরায়েলি এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার জন্য কাজ করা সংস্থাগুলো তাদের ছবি প্রচার করার পর সৈন্যদের আমস্টারডাম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
দ্য ইসরায়েলি জেনোসাইড ট্র্যাকার নামের একটি ফিলিস্তিনপন্থি সংগঠন গত সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইসরায়েলের ওই সৈন্যদের ছবি প্রকাশ করে। সেখানে সংস্থাটি বলেছে: “গাজায় গণহত্যায় অংশ নেওয়া (ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর) ৫২তম ব্যাটালিয়নের এই ইসরায়েলি ট্যাংক কমান্ডার আজ ছুটি কাটাতে আমস্টারডামে এসেছেন। এই সেনা শত শত বেসামরিক নাগরিককে (বিশেষ করে জাবালিয়ায়) অপহরণ করার সাথে জড়িত ছিলেন এবং তাদের সাথে সেলফিও তুলেছিলেন তিনি।”
ইসরায়েলের আরেক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ অনুসারে, এই দুই সৈন্যের নেদারল্যান্ডে যাওয়ার অনুমতি ছিল। পরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সিদ্ধান্ত নেয়, সৈন্যদের তাদের ছুটি কমিয়ে ইসরায়েলে ফিরে যেতে হবে। একইসঙ্গে সৈন্যদের তাদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও গাজা যুদ্ধ সম্পর্কিত সমস্ত ফুটেজ মুছে ফেলতে বলেছে সেনাবাহিনী।
মূলত গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের ভয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের সৈন্যদের বিদেশ ভ্রমণ থেকে সতর্ক করেছে বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি মিডিয়া গত জানুয়ারিতে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন সৈনিক ব্রাজিল থেকে পালিয়ে গেছেন। কারণ ব্রাজিলিয়ান কর্তৃপক্ষ তার কাজের বিষয়ে তদন্তের জন্য চাপ দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
ডিবিসি/ এসএসএস