বাংলাদেশ, রাজনীতি

চট্টগ্রামের সম্মেলন ঘিরে হেফাজতে ইসলামে ভাঙনের সুর

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৪ই নভেম্বর ২০২০ ০৭:২৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে রবিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় বসছে হেফাজতে ইসলামের সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ধর্মীয় এই সংগঠনটির ভাঙন।

একপক্ষে শফীপুত্র-প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী, অন্যপক্ষে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। দুই পক্ষের ঠান্ডা লড়াইয়ে কোণঠাসা আনাস মাদানীরা পাননি সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণপত্রও। সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।

আহমদ শফীর মৃত্যুর ঊনষাটতম দিনে হচ্ছে হেফাজতে ইসলামের সম্মেলন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় রবিবারের এই সম্মেলনে নির্বাচিত হবেন পরবর্তী আমির ও মহাসচিব। সারা দেশের জেলাপ্রতিনিধিসহ প্রায় পাঁচশ প্রতিনিধিকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দাওয়াত পাননি শফীপুত্র আনাস মাদানী ও তার অনুসারীরা।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী বলেন,'আল্লামা আহমদ সাহেবের অনুসারী যারা, পীর সাহেবের অনুসারী যারা, মুক্তি আমিনি সাহেবের অনুসারী যারা তাদেরকে দাওয়াত দেয়া হয়নি।'

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আবদুর রউফ ইউসুফি জানান,'কেউ যদি মিটিং এ প্রশ্ন তোলে তাদেরকে কেন দাওয়াত দেয়া হয়নি। তখন তারা প্রশ্নের উত্তর দেবেন।'

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন বতর্মান মহাসচিবের মামা হেফাজতের নায়েবে আমীর মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তবে আনাস মাদানীর অনুসারীদের অভিযোগ, তিনি হেফাজতের কেউ নন। কারণ চার বছর আগে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। তাই এই সম্মেলন অবৈধ। তবে মহাসচিবের অনুসারীদের দাবি, পদত্যাগ করেননি মহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

আবদুর রউফ ইউসুফি আরও বলেন,'কোন সময় হয়তো ক্ষোভ থেকে বলেছেন আপনারা এভাবে চালালে আমরা আপনার সাথে নাই। এ সব কথার ওপর তো পদত্যাগ করা যায় না।'

মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী আরও বলেন,'ওনাকে দিয়ে যদি সভাপতিত্ব করানো হয় তবে তা অবৈধ হবে। যেহেতু তিনি হেফাজতের কেউ না। হেফাজতের সদস্য পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন।'

আনাস মাদানীর অনুসারীদের দাবি, হেফাজতের নয়, সম্মেলন হচ্ছে মামা-ভাগ্নের।  তবে এই অভযোগ উড়িয়ে দিয়ে অন্যপক্ষ বলছে, অতীতে নানা অপকর্মের জন্য ধিকৃতরা অপপ্রচারে লিপ্ত।
মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী জানান,'বাবুনগরী তার অনুগতদেরকে দিয়ে কাউন্সিল করানো এটাই প্রমাণিত যে, বাবুনগরী শীর্ষপদ অর্থাৎ আমীরের পদ দখল করতে চায়।'

হেফাজতে ইসলাম কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আবদুর রউফ ইউসুফি জানান,'কমিটি করার কোন অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না। যারা কোন দলে বঞ্চিত হয় তাদের পক্ষ থেকে যে কোন দলে এমন অভিযোগ আসে।'

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হেফাজতে ভাঙন এখন সময়ের ব্যাপার। আবদুর রউফ ইউসুফি আরও বলেন,'হেফাজতে ইসলাম যদি কোন করাণে ভেঙ্গে যায় তবে তার দায়-দায়িত্ব যারা এই কাউন্সিলের দায়িত্বে তাদেরকেই বহন করতে হবে।'

হেফাজতের নেতারা বলছেন, প্রতিনিধি সম্মেলন হলেও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে পনেরো সদস্যের শুরা কমিটি।  আমির পদে আসতে পারেন জুনায়েদ বাবুনগরী আর তার পছন্দের ব্যক্তিই হবেন মহাসচিব।

আরও পড়ুন