ভিসা জটিলতার সমাধান, বেকার ক্যাডেট ও রেটিংদের চাকরি নিশ্চিতকরণসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে ঢাকার রাজপথে মানববন্ধন করেছেন দেশের নাবিকরা। বুধবার (২রা জুলাই) বিকেলে 'বাংলাদেশ মেরিনার্স কমিউনিটি'র ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, "ভিসা সমস্যার কারণে দুবাইয়ের জাহাজ কোম্পানিগুলোতে আমাদের কয়েক শত মেরিন অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার এবং রেটিং ‘সাইন অন’ বা ‘সাইন অফ’ করতে পারছেন না। এতে দেশ বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফিলিপাইন ও ভারতের নাবিকদের মতো আমাদের নাবিকদের জন্যও ইউরোপ, আমেরিকা এবং আরব দেশগুলোতে ‘ওকে টু বোর্ড’ ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে।"
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা সাইফুল হক বলেন, বেকার ক্যাডেট এবং নতুন নাবিকদের চাকরি নিশ্চিত করতে দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজে তাদের নিয়োগ দ্বিগুণ করতে হবে। তিনি ডিপ্লোমাধারীদের কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (সিডিসি) প্রদানের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, একসময় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বহরে ৩৯টি জাহাজ থাকলেও এখন মাত্র ৫টিতে এসে ঠেকেছে। তারা দাবি করেন, লাভজনক এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যদি ১০০টি জাহাজ ক্রয় করে, তবে পণ্য আমদানিতে বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরতা কমবে এবং দেশের রিজার্ভ এক বছরেই ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। এতে প্রায় ২০ হাজার নাবিকের কর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে।
অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, যেসব দেশে বড় জাহাজ কোম্পানি রয়েছে, সেখানে মেরিটাইম কাউন্সিলর নিয়োগ দিয়ে নাবিকদের জন্য নতুন চাকরির বাজার সৃষ্টি করতে হবে।
চীনের উদাহরণ টেনে বক্তারা বলেন, চীনের সাড়ে ১১ হাজারের বেশি জাহাজে প্রায় ৪ লক্ষ ফিলিপিনি ও ভিয়েতনামের নাবিক কর্মরত। অথচ কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে দক্ষতা ও সুনাম থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের নাবিকরা সেখানে সুযোগ পাচ্ছে না, যার ফলে দেশ বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে।
ক্যাপ্টেন রেদওয়ান সিকদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এনসিপি নেত্রী দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, ক্যাপ্টেন আতিক, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা, ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ, ইঞ্জিনিয়ার জিলানী।
ডিবিসি/এএনটি